রাজউকের পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দ দুর্নীতির মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন আদালত।

রোববার (২৭ এপ্রিল) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।

এর আগে, গত ১০ এপ্রিল প্লট বরাদ্দ দুর্নীতির মামলায় সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন আদালত। আর প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে করা পৃথক তিনটি মামলায় ১৩ এপ্রিল শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববিসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন আদালত। তিনটি মামলাতেই শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক এবং সাবেক গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদসহ ১৬ জন অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি।

দেশে ছোট-বড় ইস্পাত কারখানা অর্ধশত। এর ৬২ শতাংশ চট্টগ্রামে। শুধু ইস্পাত নয়; গার্মেন্ট সেক্টরেও ঢাকার পরে অবস্থান চট্টগ্রামের। সংকটে পড়ে গত সাত মাসে এসব কারখানার ৫০টি বন্ধ হয়ে গেছে। আর বিনিয়োগের পথে থাকা শতাধিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম থমকে গেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গ্যাস ও বিদ্যুতের সংকট এবং দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে শিল্পকারখানায়; বিশেষত টেক্সটাইল, সিরামিক ও ইস্পাত কারখানা। এগুলো গ্যাসনির্ভর। তাই গ্যাসের সরবরাহ ঠিকমতো না পাওয়া, কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় গ্যাসের চাপ না পাওয়া এবং দাম বৃদ্ধির কারণে উৎপাদন উল্লেখযোগ্য মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। 

 
 

২০২৩ সালে শিল্পে গ্যাসের দাম বেড়েছে ১৭৮ শতাংশ। চলতি মাসে (১৩ এপ্রিল) নতুন শিল্প ও ক্যাপটিভ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য গ্যাসের দাম আরও ৩৩ শতাংশ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। শিল্প উদ্যোক্তারা বলছেন, এতে নতুন বিনিয়োগকারীরা পিছিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি পুরোনো শিল্পমালিকরাও চাপে পড়েছেন। কারণ অনুমোদিত লোডের ৫০ শতাংশের বেশি ব্যবহার করলে তাদেরও গুনতে হবে বাড়তি দাম। 

 

এর বাইরে গত ১৪ বছরে দেশে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ৯ বার। এ সময়ে বিদ্যুতের দাম পাইকারি পর্যায়ে ১১৮ আর গ্রাহক পর্যায়ে বেড়েছে ৯০ শতাংশ। সেটিও শিল্প উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

 

ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম বলেন, সিস্টেম লস না কমিয়ে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছে। এতে আবাসিকের গ্রাহক যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তেমনি উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে শিল্প মালিকদের। সিস্টেম লসের দায় ভোক্তার ওপর চাপানো অন্যায়। সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধ করা দরকার। তাহলে কিছু দিন পরপর দাম বাড়ানোর চাপ আর নিতে হবে না গ্রাহককে।

বিইআরসি ১৩ এপ্রিল নতুন শিল্পের জন্য গ্যাসের দাম প্রতি ইউনিটে ১০ টাকা বাড়িয়ে ৪০ টাকা করেছে। শিল্পে নিজস্ব বিদ্যুৎকেন্দ্রে (ক্যাপটিভ) ব্যবহৃত গ্যাসের দাম ছিল ৩১ টাকা ৫০ পয়সা। এটি বেড়ে হয়েছে ৪২ টাকা। এখন যত গ্যাস সংযোগ অনুমোদন করা হবে, তাদের বাড়তি দাম দিতে হবে। এ জন্য হঠাৎ করে শিল্পকারখানার উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে।

জিপিএইচ ইস্পাতের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলমাস শিমুল বলেন, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম যেভাবে বাড়ছে, সেভাবে সেবার মান বাড়ছে না। বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়লেও কিছু দিন পরপর দাম বাড়ছে। চাহিদা মতো মিলছে না গ্যাসও। আবার তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) সরবরাহ প্রক্রিয়ায় কোনো সমস্যা হলে তার প্রভাব পড়ছে চট্টগ্রামের শিল্পকারখানায়। এসব নিয়ে দায়িত্বশীলদের গভীরভাবে ভাবতে হবে। তা না হলে ক্রমবর্ধমান উৎপাদন ব্যয়ের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে বন্ধ হয়ে যাবে ছোট কারখানাগুলো। 

বিজিএমইএর সাবেক সহসভাপতি নাছির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, যে পদ্ধতিতে গ্যাসের দাম নির্ধারণ করা হচ্ছে, এটা ঠিক না। আমদানি ও সরবরাহকারী পর্যায়ে দুই দফায় ভ্যাট, পরিচালন খরচ ও উন্নয়ন খরচ যুক্ত করে দাম নির্ধারণ করছে। দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছে বিদ্যুতের দামও। সব চাপ দেওয়া হচ্ছে ব্যবসায়ীদের ওপর। অথচ সিস্টেম লসের নামে গ্যাস ও বিদ্যুৎ চুরি ঠেকাতে পারছেন না দায়িত্বশীলরা। তাদের অনিয়ম ও অদক্ষতার দায় নিতে হচ্ছে ১৬ কোটি মানুষকে। কারণ পণ্য উৎপাদনের ব্যয় বেড়ে গেলে স্বাভাবিকভাবে তার প্রভাব পড়ে দেশের জনগণের ওপর।

নতুন চ্যালেঞ্জে ইস্পাত কারখানা 
মার্কেট ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড কনসালটিংয়ের প্ল্যাটফর্ম বিগমিন্টের তথ্য অনুসারে, দেশে ছোট-বড় ইস্পাত কারখানার মধ্যে চট্টগ্রামে ৬২ এবং ৩২ শতাংশ ঢাকায়। দফায় দফায় গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধিতে এসব ভারী প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। কেএসআরএমের মিডিয়া অ্যাডভাইজার মিজানুল ইসলাম বলেন, এক মিনিটের জন্যও ইস্পাত কারখানায় উৎপাদন বন্ধ রাখা যায় না। তাই চাহিদা কমে গেলেও কারখানা সচল রাখতে হয়। এর মধ্যে কয়েক দফা বেড়েছে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম। বাড়ছে কাঁচামালের দামও। এমন নানা কারণে গত দুই বছরে আমাদের উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে অন্তত ২০ শতাংশ।

প্রতিদিন চার হাজার টন রড উৎপাদনক্ষমতার আবুল খায়ের স্টিলও মোকাবিলা করছে কঠিন চ্যালেঞ্জ। প্রতিষ্ঠানটির সহকারী মহাব্যবস্থাপক  ইমরুল কাদের ভূঁইয়া বলেন, উৎপাদন খরচ যেভাবে বাড়ছে, সেভাবে বাড়ছে না রডের দাম। কারণ, এটি বেশি বেড়ে গেলে আবার চাহিদা কমে যাবে। এমন উভয় সংকটের মধ্যে ব্যবসা চালিয়ে নিতে হচ্ছে।
 
সার উৎপাদন ব্যাহত
আনোয়ারায় রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড (সিইউএফএল) গ্যাস সংকটে গত শুক্রবার সকাল থেকে সার উৎপাদন বন্ধ রেখেছে। চালু থাকলে দৈনিক ১ হাজার ২০০ টন ইউরিয়া উৎপাদন করতে সক্ষম এই প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি বার্ষিক ৩ লাখ ১০ টন অ্যামোনিয়া উৎপাদন করতে পারে সিইউএফএল। এর আগে কয়েক দফা উৎপাদন বন্ধ রাখতে হয়েছিল কাফকো ও ডিএপি সার কারখানাকেও।

সিইউএফএলের উৎপাদন বিভাগের প্রধান উত্তম চৌধুরী বলেন, ১১ এপ্রিল সকাল ৭টা থেকে কারখানায় উৎপাদন বন্ধ। গ্যাস সংকটের কারণে আমরা এখনও উৎপাদনে যেতে পারিনি।

সিইউএফএলে প্রতিদিন গড়ে ৪৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস দরকার হয়। এক দিন বন্ধ থাকলে কারখানাটিতে গড়ে ৩ কোটি টাকার ইউরিয়া সার উৎপাদন বন্ধ থাকে।

চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ তদারকি প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) আমিনুর রহমান এর আগে বলেছেন, চট্টগ্রামে দৈনিক ৩১২ মিলিয়ন থেকে ৩৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। মহেশখালী এলএনজি টার্মিনাল থেকে পাওয়া যায় ২৮০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। ঘাটতি থাকলেও সার কারখানায় দেওয়া হয় ১০০ মিলিয়ন ঘনফুটের বেশি গ্যাস। বিদ্যুৎকেন্দ্রে যাচ্ছে ৪০ মিলিয়ন ঘনফুট। সিএনজি ফিলিং স্টেশনে দিতে হচ্ছে ১৯ মিলিয়ন ঘনফুট। বাকি গ্যাস দেওয়া হয় কেজিডিসিএলের ৬ লাখ ১ হাজার ৯১৪টি আবাসিক ও বাণিজ্যিক গ্রাহককে। গৃহস্থালি ছাড়াও ইস্পাত, কাচ, সিমেন্ট, শিপ ব্রেকিং, ঢেউটিন, গার্মেন্টের মতো ভারী শিল্প খাতেও সংযোগ রয়েছে।

সংকট বাড়ছে পোশাক কারখানায়
পোশাক মালিকরা বলছেন, উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় তারা তাল মেলাতে পারছেন না। গত সাত মাসে এমন বন্ধ হওয়া কারখানার সংখ্যা অন্তত ৫০টি। 

তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ জানায়, গ্যাসের চাপ কম থাকলে টেক্সটাইল কারখানায় রঙের গুণগত মান নষ্ট হয়ে যায়। আবার বিকল্প জ্বালানি দিয়ে উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে গেলে খরচ বেড়ে যায় দ্বিগুণের বেশি। 

গত সাত মাসে বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানার মধ্যে বিজিএমইএর আওতাধীন ১৮টি, বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) আওতাধীন দুটি, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) একটি, বেপজার ৯টি ও অন্য সংগঠনের সদস্যপদে থাকা ২২টি কারখানা রয়েছে। 

নতুন শতাধিক প্রতিষ্ঠানের ওপর চাপ
আনোয়ারার সাদ মুসা শিল্প পার্কে বিনিয়োগ করবে ৩২টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ৯টি প্রতিষ্ঠান সেখানে উৎপাদন শুরু করেছে। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। গ্যাসের দাম বৃদ্ধির নতুন সিদ্ধান্তে তাদের ওপর চাপ তৈরি হয়েছে। আবার মিরসরাইয়ের শিল্পনগরে হচ্ছে দেশের প্রথম অ্যালুমিনিয়াম ইনগট ও কপার ইনগট তৈরির কারখানা। বাংলাদেশ-জাপান যৌথ বিনিয়োগে কারখানাটি হবে ৫০ একর জমির ওপর। কাঁচামাল আসবে জাপান থেকে। এ জন্য বাংলাদেশি শিল্প গ্রুপকে নিয়ে গঠন করা হয়েছে স্টার অ্যালাইড ভেঞ্চার লিমিটেড। বিপদে পড়বে এই প্রতিষ্ঠানও। 

চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান কুনমিং আয়রন অ্যান্ড স্টিল কোম্পানি এখানে ১৯ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। এ জন্য তাদের এক হাজার একর জমি দেওয়া হয়েছে। এই বিনিয়োগে থাকছে বাংলাদেশি ১৭টি কোম্পানির জোট ‘স্টার কনসোর্টিয়াম’। মিরসরাইয়ের শিল্পনগরে সবচেয়ে বড় প্রকল্প এনেছে পিএইচপি স্টিল ওয়ার্কস লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির বিনিয়োগের প্রস্তাব প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া রুরাল পাওয়ার কোম্পানি ১২০ কোটি ডলার, বসুন্ধরা দেড়শ কোটি ডলার, বাংলাদেশ এডিবল অয়েল ৪০ কোটি, এসিআই ৩১ কোটি, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) ২৬ কোটি এবং অনন্ত অ্যাপারেলস ২২ কোটি ৯০ লাখ ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব এনেছে। গ্যাসের দাম বাড়ানোর নতুন সিদ্ধান্তে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এসব প্রতিষ্ঠানও।

ধর্ষণের শিকার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদের কলেজপড়ুয়া মেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। ঢাকার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

প্রসঙ্গত, গত ১৮ মার্চ পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার পাঙ্গাসিয়া ইউনিয়নে শহীদের ওই কিশোরী মেয়েকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় তার পরেরদিনই অভিযুক্ত একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, এ ঘটনায় অভিযুক্ত একজন গ্রেফতার হয়েছিলো। এছাড়া যারা চিহ্নিত অপরাধী তারা ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। এ বিষয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই হতাশার মধ্যে ছিলেন ভুক্তভোগী কিশোরী। এসব হতাশা থেকেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পুলিশ ও ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন মেয়েটি তার বাবার কবর জিয়ারত শেষে নানাবাড়ির উদ্দেশে রওয়ানা হয়। পথে নলদোয়ানী এলাকা থেকে সাকিব ও সিফাত নামে দুজন তাকে অনুসরণ করতে থাকেন। একপর্যায়ে তারা মুখ চেপে ধরে পাশের জলিল মুন্সির ভিটা বাগানে নিয়ে যান। সেখানে তাকে ধর্ষণ করা হয় এবং ঘটনার ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। এ ঘটনায় দুজনের নাম উল্লেখ করে দুমকি থানায় মামলা করেছিলেন ভুক্তভোগী কলেজছাত্রী। 

গত ১৫ বছর স্বাধীনভাবে কেউ কোনো কথা বলতে পারেননি, তাই বর্তমানে এত আন্দোলন হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে বিশ্ব বই ও কপিরাইট দিবস উপলক্ষ্যে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান সরকার দেশের সব সমস্যার সমাধানে বিরতিহীন কাজ করে যাচ্ছে। মতিঝিলে হেফাজতে ইসলামের ওপর চালানো হত্যাকাণ্ডের বিভিন্ন প্রমাণ থাকার পরও কেউ কোনো প্রতিবাদ করেনি বলে অভিযোগ করেন তিনি।

ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেন, বর্তমান অস্থির সময়ে সহনশীলতার অভাবের বিপরীতে একমাত্র হাতিয়ার হচ্ছে বই। এ সময় প্রকাশনা শিল্প সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। জনগণের সমর্থন ও রায় নিয়ে বিএনপি এই সংস্কার কার্যক্রম শুরু করবে। জনমানুষের যে চাওয়া, তার সাথে একটি মহলের চাওয়ার অমিল রয়েছে। তবে বিএনপি সফল একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের দাবি দাওয়া নিয়ে সংস্কার কার্যক্রম চালাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে পঞ্চগড়ের পৌরসভা চত্বরে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি প্রশিক্ষণ কর্মশালা’ শীর্ষক কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তারেক রহমান বলেন, অনেকে অনেক কিছু বলতে পারে। তবে আমাদের প্রতিজ্ঞা দৃঢ়। সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে, আমরা যা মানুষের সামনে বলেছি, তাই করবো ইনশাআল্লাহ। বাংলাদেশের একটি প্রধান দল হিসেবে আমরা শুরু করবো, এরপর আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম ও নেতাকর্মীরা তা চালিয়ে যাবে। 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমরা দেশের সকলকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে চাই। আমাদের মাঝে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতপার্থক্য থাকতেই পারে। গণতন্ত্রে মতপার্থক্য থাকাটাই স্বাভাবিক। তবে কোনোভাবেই যাতে মানুষের ভোট ও রাজনৈতিক অধিকার বাধাগ্রস্ত না হয়। কারণ এসব বাধাগ্রস্ত হলে সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে। 

তিনি আরও বললেন, বিগত ১৫ বছর জনগণের রাজনৈতিক অধিকার ও ভোটের অধিকারকে কেড়ে নেয়া হয়েছিল। তার ফলে বিচারব্যবস্থা, অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ও স্বাস্থ্য-চিকিৎসা খাত ধ্বংস হয়ে গেছে। সমাজে বিভিন্ন অধঃপতন ও বিভিন্ন অনাচার শুরু হয়।

কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান বিন জসিম আল থানির সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। চারদিনের কাতার সফরের শেষদিনে আজ বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দোহায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।

সাক্ষাৎকালে কাতারের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বের প্রতি পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেন এবং দেশের পুনর্গঠন ও উন্নয়নে সর্বাত্মক সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দেন। পাশাপাশি বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিতে তার এক কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়ার ঘোষণা দেন।

অন্যদিকে, প্রধান উপদেষ্টা দেশের প্রায় ১৮ কোটি জনসংখ্যা, বিশেষ করে যুবসমাজের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে ‘নতুন বাংলাদেশ’ গড়ার জন্য কূটনৈতিক, আর্থিক ও বিনিয়োগ সহায়তা চান।

কাতারের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে দশ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয়ের ভূমিকার জন্য প্রশংসা করেন এবং সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সহায়তা জোরদারের আহ্বান জানান। তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি কাতারের অব্যাহত সমর্থন এবং টেকসই সমাধানের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

এ সময় দুই নেতা ফিলিস্তিনের গাজার পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করেন। তখন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, জ্বালানি উপদেষ্টা ফওজুল কবীর খান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, এসডিজি বিষয়ক সমন্বয়কারী লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার ডিবিতে থাকা নথি আগুনে পুড়ে গেছে বলে হাইকোর্টকে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। তবে মামলার তদন্ত সংস্থা পিবিআই জানিয়েছে, মামলার নথি আগুনে পোড়েনি, খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ তথ্য জানানো হয়। এদিকে রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদনের প্রেক্ষিতে, সাগর-রুনি হত্যার ঘটনায় করা মামলা তদন্তে আরও ৬ মাস সময় দিয়েছেন হাইকোর্ট।

গত ২৩ অক্টোবর হাইকোর্টের নির্দেশে এই মামলা তদন্তে পিবিআই প্রধানকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করা হয়। সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য এ পর্যন্ত ১১৮ বার সময় বাড়ানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া করা বাসায় খুন হন সাংবাদিক দম্পতি মাছরাঙা টেলিভিশনের তৎকালীন বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি। এরপর নিহত মেহেরুন রুনির ভাই নওশের আলম রোমান ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

নারীর প্রতি বৈষম্য দূর করতে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের যেসব সুপারিশ এখনই বাস্তবায়নযোগ‍্য তা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ শনিবার (১৮ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন গ্রহণের পর তিনি এই নির্দেশনা প্রদান করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, যেই সুপারিশগুলো দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য সেটা যেন আমাদের মাধ্যমে হয়ে যায়। আমরা যেন এই কাজের মাধ্যমে বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্য উদাহরণ সৃষ্টি করতে পারি। পৃথিবীর মেয়েরা এটার দিকে তাকিয়ে আছে। তারা এটা নিয়ে পর্যালোচনা করবে। অনুপ্রাণিত হবে। অন্য দেশের নারীরাও এটা নিয়ে সিরিয়াস।

তিনি আরও বলেন, এটা শুধু নারীদের বিষয় নয় সার্বিক বিষয়। এই প্রতিবেদন ছাপিয়ে বিলি করা হবে। এটা পাঠ্যবইয়ের মতো বই আকারে ছাপা হবে। দলিল হিসেবে অফিসে রেখে দিলে হবে না, মানুষের কাছে উন্মুক্ত করে দিতে হবে।

নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের এই প্রস্তাবগুলো জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছেও নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানান অধ্যাপক ইউনূস।

নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভিন হক বলেন, জুলাইয়ে যারা প্রাণ দিয়েছে তাদের স্মরণার্থে এমন কিছু করতে চেয়েছি যা মানুষের জন্য কল্যাণকর হবে, সমাজের জন্য কল্যাণকর হবে।

তাদের প্রতিবেদনে সুপারিশগুলোকে তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, কিছু এ সরকারই করে যেতে পারবে, কিছু পরের নির্বাচিত সরকার করতে পারবে এবং নারী আন্দোলনের আশা-আকাঙ্ক্ষাগুলো আলাদা করে তুলে ধরা হয়েছে।

এই সংস্কার কমিশন ১৫টি বিষয়ে সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে বলে জানানো হয়। এ সময় নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শাসিত নয়, মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকারের প্রস্তাব দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি। সেইসাথে সংবিধান সংশোধনের জন্য গণভোটের দাবিও করেছে দলটি।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানানো হয়।

এনসিপি’র প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে আরও আছে, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী দুইবারের বেশি নির্বাচিত হতে পারবে না এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ইলেকটোরাল কলেজের মাধ্যমে করা।

জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জানান, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য, সংবিধান ও নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে এনসিপি। এ সময় কমিশনের ১৬৬টি বিষয়ের মধ্যে ১২৯টিতে একমতের কথাও জানানো হয়।

অপরদিকে, আলোচনায় সংবিধান পুনর্লিখন, ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া শান্তিপূর্ণ করা ও নাগরিকদের নিরাপত্তাকে অধিক গুরুত্ব দেয়ার কথাও বলা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ৭০ অনুচ্ছেদের ব্যাপক সংস্কার চায় এনসিপি। এ সময় অর্থবিল ছাড়া দলের বাইরে ভোট দেয়ার সুযোগ, সংসদের স্থিতিশীলতা ও সংসদ সদস্যদের স্বাধীনতা নিশ্চিতের কথাও তুলে ধরা হয়েছে বলে জানান নাহিদ ইসলাম।

 
পক্ষকাল ব্যাপী পাহাড়ের বৃহৎ সামাজিক উৎসব সমাপ্তি হয়ে গেল রাঙ্গামাটির জলকেলী উৎসবের মাধ্যমে। এই উৎসবকে বিজু সাংগ্রাই বৈসু, বিষু বিহু চাং ক্রান পাতা নামে ভিন্ন ভিন্ন জাতিরা নাম দিয়ে থাকে। রাঙামাটিসহ তিন পার্বত্য জেলার পাহাড়ে বর্ষবিদায় এবং বর্ষবরণ উপলক্ষে পাহাড়ী জনগোষ্ঠী চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যাসহ ১৪টি জাতি গোষ্ঠী নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে।
 
রাঙ্গামাটি জল উৎসবে বক্তব্য রাখেন সুপ্রদীপ চাকমা
 
শনিবার মারমা সম্প্রদায়ের সাংগ্রাই জল উৎসবের মাধ্যমে শেষ হলো পার্বত্য চট্টগ্রামের মারমা সম্প্রদায়ের প্রধান সামাজিক উৎসব সাংগ্রাই বা জলকেলি উৎসব। পুরাতন বছরের সকল গ্লানি ফেলে নতুন বছরের শুভ কামনায় এ আয়োজন করা হয় প্রতিবছর। আজ রাঙামাটি ষ্টেডিয়ামে পানি খেলা ও নাচে গানে মেতে ছিলো মারমা সম্প্রদায়ের লোকজনের সাথে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের হাজারো মানুষের মিলন মেলায় মুখরিত উৎসবে।
 
রাঙ্গামাটির জলকেলী উৎসবে তোলা ছবি
 
মারমাদের অন্যতম সামাজিক উৎসব হলো সাংগ্রাই। মুলত পুরোনকে ধুয়ে মুছে নতুন বছরকে স্বাগত জানানো জন্য এই সাংগ্রাই উৎসব এর আয়োজন করা হয়। উৎসব উপলক্ষ্যে মারমা সাংস্কৃতিক সংস্থা (মাসস) এর উদ্যােগে সকাল ১১ ঘটিকায় রাঙামাটির মারী স্টেডিয়ামে আয়োজন করা হয় সাংগ্রাই জল উৎসবের ফিতা কেটে জল উৎসবের উদ্ধোধন করেন পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা।
 
রাঙ্গামাটির জলকেলী উৎসবে তোলা ছবি
 
মারমা সাংস্কৃতিক সংস্থা (মাসস) একাংশের সভাপতি থোয়াই সুই খই মারমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার, রাঙামাটি জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ, পুলিশ সুপার ড. এসএম ফরহাদ হোসেন, জেলা বিএনপির সভাপতি দীপন তালুকদার দীপু, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মামুনুর রশিদ মামুনসহ আরও অনেকেই। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশ থেকে আগত রাষ্ট্রদূতসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা আংশগ্রহনের করেছেন।
 
রাঙ্গামাটির জলকেলী উৎসবে তোলা ছবি
 
এই উৎসবে শত শত পাহাড়ী নারী পুরুষ ছাড়াও সমতল হতে আগত লোকজন যোগ দেন। তাদের পরনে ছিলো নানান রং এর পোশাক। নেচে গেয়ে একে অপরের গায়ে পানি ছিটিয়ে তারা উৎসব পালন করেন।
 
একদিকে বিশালাকার মঞ্চে মারমা শিল্পীদের মনোমুগ্ধকর গান আর নাচ চলছিলো আর অন্যদিকে মারমা তরুন তরুণীরা একে অপরের গায়ে জল ছিটিয়ে দিচ্ছিলো।
 
রাঙ্গামাটির জলকেলী উৎসবে তোলা ছবি
 
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, আমরা সবাই চাই, পার্বত্য এলাকার সব জাতিগোষ্ঠী যারা আছে, আপনারা আমাদের ওপর নির্ভর করুন। এই এলাকায় শান্তি ফিরে আসুক। যেন কোনো ভেদাভেদ না থাকে। আমরা সবাই বাংলাদেশী, এখানে বৃহত্তর, ক্ষুদ্র বলতে কিছু নেই।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, খাগড়াছড়ি অপহরণ ৫ শিক্ষার্থীদের সেনাবাহিনী অভিযান চালাচ্ছে। আশা করি তারা দ্রুত উদ্ধার হবে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার নদী ভাঙন কবলিত এলাকা ফলুয়ার চর, সেনাপুর ও নামাজের চর পরিদর্শন করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঢাকা বিডব্লিউডিবি ডিজাইন সার্কেলের নির্বাহী প্রকৌশলী
ফাইয়াজ জালাল উদ্দিন, ডিজাইন সার্কেলের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন ও কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান। 

শুক্রবার দুপুরে এসব ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেন তারা।

 
 

প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, রৌমারীর বিভিন্ন নদী ভাঙন কবলিত এলাকার জন্য কিছু বরাদ্দ চাওয়া হয়েছিল। ঢাকা থেকে ডিজাইন দল এই চাহিদাগুলো সঠিক আছে কি-না, তা ভেরিফাইড করতে এসেছে। তারা গিয়ে প্রতিবেদন দেবেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা হয়তো বাজেটের অনুমোদন পাব। তারপর দরপত্র আহ্বান করে খুব দ্রত কাজ শুরু করব।

 

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দরপত্র প্রক্রিয়া করে সর্বোচ্চ এক মাসের মধ্যে কাজ শুরু করতে পারি। এছাড়াও স্থানীয়দের বাঁশের বান্ডিল ও বস্তা ফেলার দাবি রয়েছে। এ বিষয়ে উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করব। 

 

পরিদর্শনের সময় উপস্থিত ছিলেন- রৌমারী নদী রক্ষা সংগঠক মহিউদ্দিন মহির ও ট্রোসা-২ প্রকল্পের প্রজেক্ট অফিসার খায়রন্নেসা সরকারসহ স্থানীয়রা।

মহিউদ্দিন মহির বলেন, সোনাপুর, ঘুঘুমারী ও সুখেরবাতি অঞ্চলে ভাঙন শুরু হয়েছে, বিশেষ করে সোনাপুর এলাকায় ভাঙনের যে তীব্রতা, এক সপ্তাহের মধ্যে এক কিলোমিটার ভেঙে ভেতরে ঢুকেছে। বাড়িঘর সব বিলীন হয়ে গেছে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, এখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, চারতলা ভবন ও বাজার আছে, এগুলো যদি দ্রুত রক্ষা করতে না পারি, তাহলে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।

প্রতিবছর ব্রহ্মপুত্রে পানি বাড়া-কমার সঙ্গে সঙ্গে রৌমারী উপজেলায় দেখা দেয় তীব্র ভাঙন। এতে খেদাইমারী, সুখেরবাতি, ঘুঘুমারী, সোনাপুর ও নামাজের চর, উত্তর খাউরিয়া, ঘুঘুমারী, চর ইটালুকান্দা, চর খেদাইমারীর প্রায় ৫০০ মানুষের ভিটেমাটি, হাজার হাজার একর আবাদি জমি, পাঁচটির বেশি শিক্ষা ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান, স্থানীয় বাজার, মসজিদসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। রাস্তার ধারে খোলা আকাশের নিচে কিংবা অন্যের ভিটায় ঠাঁই নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করতে হয় ভাঙন কবলিত মানুষদের। নির্ঘুম রাত কাটাতে হয় নদী তীরবর্তী বাড়ির বাসিন্দাদের। কখন যে ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে যায় তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকতে হয় তাদের। ভিটেমাটি হারানো তাদের প্রতিবছরের দুঃখ গাঁথা। শুষ্ক মৌসুম ছাড়া সারা বছর কম-বেশি ভাঙতে থাকে নদী। 

রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অক্সিজেন না পেয়ে সেমলি চাকমা নামে এক মাস বয়সী শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ করেছে তার পরিবার। শুক্রবার সকালের এ ঘটনায় চিকিৎসকরা বলেছেন, হাসপাতালে আনার আগেই শিশুটির মৃত্যু হয়।

শিশুটির বাবা উপজেলার সার্বোয়াতলী ইউনিয়নের রিটন চাকমার দাবি, তাঁর মেয়ে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে শুক্রবার সকালে বাঘাইছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। হাসপাতালে অক্সিজেন দেওয়ার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। যথাসময়ে চিকিৎসা না পেয়ে তাঁর মেয়ে মারা গেছে।

সন্ধ্যায় স্থানীয় সাংবাদিকরা সরেজমিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে অক্সিজেনের সিলিন্ডার দেখতে পান। তবে তাতে কোনো অক্সিজেন ছিল না। হাসপাতালের বিশ্বস্ত সূত্রের দাবি, ঈদুল ফিতরের আগ পর্যন্ত তারা অক্সিজেনের সরবরাহ পেয়েছেন। বর্তমানে সিলিন্ডারে কোনো অক্সিজেন নেই। যদিও রাঙামাটি সিভিল সার্জন ডা. নূয়েন খীসা বলেছেন, যতটুকু জেনেছি, হাসপাতালে আনার আগেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে অক্সিজেনের যথেষ্ট সরবরাহ রয়েছে। তার পরও বিষয়টি তদন্ত করা হবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক দেবাশীষ বণিক বলেন, শুক্রবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে শিশুটিকে হাসপাতালে আনা হয়। আমরা তার কোনো পালস পাইনি। এখানে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। তার পরও আমরা শিশুটিকে পাঁচ মিনিটের মতো সিপিআর দিয়েছি। অক্সিজেনের অভাবে মারা যাওয়ার তথ্য সঠিক নয়।

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরিন আক্তার জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অক্সিজেনের কোনো সিলিন্ডার ছিল না বলে জেনেছি। জনবল সংকটও রয়েছে। ১৬ চিকিৎসকের জায়গায় মাত্র চারজন দিয়ে কার্যক্রম চলছে।