সেনাসদরের মিলিটারি অপারেশনসের পরিচালক কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেছেন, বিশেষ কোনও দলের ক্ষেত্রে আমাদের আলাদা কোনো নজর নেই। আমরা দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সকলেই আমাদের কাছে সমান। যেখানে জনদুর্ভোগ বা জীবন নাশের হুমকি থাকে সেখানে আমরা কঠোর হই বা আমরা জনসাধারণকে সহায়তা করে থাকি।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেস ‘এ’-তে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

গোপালগঞ্জে এনসিপি নেতাদের সহযোগিতার প্রসঙ্গ তুলে বিশেষ কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতি সেনাবাহিনীর দুর্বলতা আছে কি না জানতে চাইলে এ সেনা কর্মকর্তা এসব বলেছেন।

এ নিয়ে তার বক্তব্য, ‘সেখানে আমরা যদি আমাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করতাম তাহলে হয়তো আরও হতাহত বা জীবন নাশের সম্ভাবনা থাকতো। তো সেই হিসাবে আমরা এটা করেছি। এখানে জীবন বাঁচানোই মূল লক্ষ্য ছিল, অন্য কিছু না।’

সেনাবাহিনী কখনও কোনও রাজনৈতিক দলকে বিশেষভাবে সহায়তা করেনি বলেও দাবি করেন শফিকুল ইসলাম।

তিনি আরও বলেন, যে কোনো রাজনৈতিক দল কোথায় তাদের সভা, সমিতি ও বৈঠক করবে তা সাধারণত স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের কাছ থেকে ক্লিয়ারেন্স নিতে হয়।

উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির কর্মসূচিতে দফায় দফায় হামলা চলে। ওই ঘটনায় সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হন।

সেখানে সেনাবাহিনী প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করেনি উল্লেখ করে শফিকুল ইসলাম বলেন, এটা একটা অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি ছিল, যেখানে ইট-পাটকেলই শুধু নিক্ষেপ করা হয়নি। এখানে ককটেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। যখন সেখানে জীবন নাশের হুমকি ছিল তখন আত্মরক্ষার্থে আমাদের যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছিল তারা বলপ্রয়োগ করেছে বা করতে বাধ্য হয়েছে। এখানে প্রাণঘাতী কোন অস্ত্রের ব্যবহার করা হয়নি।

গোপালগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় সত্য উদঘাটনে অবসরপ্রাপ্ত একজন বিচারকের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিশন গঠন সত্য উন্মোচনে সক্ষম হবে বলে আশাপ্রকাশ করেন তিনি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেশের প্রতিটি মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই দেশে যাতে ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ ও চরমপন্থা মাথাচাড়া দিয়ে না উঠতে পারে। সেজন্য বিশেষ করে নারী সমাজকে ভূমিকা রাখতে হবে।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রাজধানীতে মহিলা দলের আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, একজন মায়ের চোখে বাংলাদেশ যেমন হওয়া দরকার, তেমন দেশ গড়তে আগামী নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সবার জন‍্য নিরাপদ, গণতান্ত্রিক মানবিক বাংলাদেশ গড়তে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে নারীরা ভূমিকা রেখেছেন। নারী শক্তিকে কর্মপরিকল্পনার বাইরে রেখে কোনও রাষ্ট্রই এগিয়ে যেতে পারবে না। কিন্তু দেশের প্রেক্ষাপটে অর্থনৈতিক স্বাবলম্বীতার ক্ষেত্রে নারীরা অনেকাংশে পিছিয়ে। তাদের অর্থনৈতিক সাবলম্বীতায় বিএনপির বেশকিছু পরিকল্পনা রয়েছে। নারীদের শিক্ষাদান এবং অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী করা গেলে পারিবারিক সহিংসতা রোধ করা সম্ভব।

এ সময় বিএনপি দেশ পরিচালনার সুযোগ পেলে প্রথম পর্যায়ে কমপক্ষে ৫০ লক্ষ প্রান্তিক পরিবারের ফ্যামিলি কার্ড দেয়া হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ঢাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে সংঘটিত মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় উদ্ধারকাজে অংশগ্রহণকারী সেনাসদস্যদের প্রশংসনীয় অবদানের জন্য সম্মাননা প্রদান করেছে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সেনা সদরে এ সম্মাননা দেয়া হয়। সেনাবাহিনীর এক বিজ্ঞপ্তিতে তা জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, বিপদ সংকুল পরিস্থিতিতে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক, শিক্ষক ও অন্যান্য স্টাফদের উদ্ধার কার্যক্রমে সেনাসদস্যদের সাহসিকতা ও মানবিক আচরণ সেনাবাহিনীর পেশাগত মানদণ্ডের প্রতিফলন, যা ভবিষ্যতে সকল সেনাসদস্যের জন্য প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।

৩১ জুলাই, ২০২৪। ততোদিনে আন্দোলন কেবল কোটা সংস্কারে সীমাবদ্ধ নেই। রক্ত ঝরলো কেন- সেই জবাব চাইতে এদিন শুরু হয় ‘মার্চ ফর জাস্টিস’। কারফিউ ভেঙে শিক্ষার্থীদের সাথে আন্দোলনে যোগ দেন সারাদেশের আইনজীবীরাও।

‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে যোগ দিতে ৩১ তারিখ বেলা ১২টার দিকে দোয়েল চত্বরে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনে যুক্ত হয় বুয়েটের তরুণরাও। পুলিশি বাধা উপেক্ষা করেই হাইকোর্ট অভিমুখে যেতে থাকে মানুষের স্রোত। এসময় আটক করা হয় বেশ কয়েকজনকে।

এদিকে, শিক্ষার্থীদের ডাকে সাড়া দিয়ে হাইকোর্ট প্রাঙ্গনেও তখন শুরু আইনজীবীদের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’। মিছিল নিয়ে বের হতে চাইলে পুলিশের সাথে হয় ধ্বস্তাধস্তি। ততোক্ষণে শিক্ষার্থীরাও এসে যোগ দেন আইনজীবীদের সাথে। এদিন জাতি দেখেছিল, শিক্ষার্থীদের প্রতি আইনজীবীদের অকুণ্ঠ সমর্থন। পুলিশের কাছে নিজেদের জিম্মি করে শিক্ষার্থীদের মুক্তি দেয়ার দাবি জানান তারা।

কারফিউর শেকল ভাঙা হচ্ছিলো গোটা দেশজুড়েই। রাস্তায় নামেন সারাদেশের শিক্ষার্থী-শিক্ষক-আইনজীবী আর নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ। চট্টগ্রামে আইনজীবীদের সহায়তায় আদালত প্রাঙ্গনে চলে আন্দোলন। রাজশাহী, খুলনা, দিনাজপুর, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইলসহ সারাদেশের পরিস্থিতিই সেদিন এক। কোনো চোখ রাঙানিতে আর কাজ হয়নি সেদিন।

এদিকে, বিক্ষোভে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি না করার নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানি কৌশলে এড়িয়ে যাওয়া হয়। বলা হয়, হাইকোর্ট বেঞ্চের এক বিচারপতি অসুস্থ, তাই হবে না শুনানি।

অন্যদিকে, পরিস্থিতি বুঝে বর্তমান-সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের একত্রিত করার চেষ্টা করছিলেন ওবায়দুল কাদের। তবে দাবার গুটি উল্টে যায়, নিজ দলের সাবেক নেতাদের কাছেই তাকে হতে হয় হেনস্তা। সাবেক নেতাদের ‘ভুয়াধ্বনির’ মুখে কোনোরকমে ঘটনাস্থল ছাড়েন সাবেক এই মন্ত্রী।

এদিন গোয়েন্দা বিভাগ থেকে ডিবি হারুণকে বদলি করে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। আর এদিন থেকেই ঢাকার সবগুলো থানার দায়িত্ব আনুষ্ঠানিকভাবে চলে আসে তার হাতে।

সমন্বয়করা বলছেন, ততোদিনে ভেতরে ভেতরে তৈরি হয়েছে ‘বিদ্রোহী ছাত্রলীগ’। ছাত্রলীগের অনেকে দলীয় বিভিন্ন পরিকল্পনা সম্পর্কে আগে থেকেই সতর্ক করতেন আন্দোলনকারীদের। অনেক ছাত্রলীগ নেতা এসময় পদত্যাগও করেন।

সাবেক সমন্বয়ক রিফাত রশিদ বলেন, সবাইতো আসলে মন থেকে ছাত্রলীগ করেনি। ছাত্রলীগের যেসব সদস্য মন থেকে সাপোর্ট করতো না, তাদেরকে আমরা আন্দোলনে যুক্ত করেছি।

জুলাইয়ের শেষ দিনে স্পষ্ট হয়ে যায়, আন্দোলন এখন আর কেবল শিক্ষার্থীদের মাঝে বা কোটার দাবিতে সীমাবদ্ধ নেই্। জনমানুষ ততোদিনে বিক্ষুব্ধ—সবার দাবি, হত্যার বিচার।

সরকারি কর্ম কমিশন, দুদক, মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এবং ন্যায়পাল নিয়োগের বিধান নিয়ে শেষ দিনের আলোচনায় রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আজ বৈঠকে বসছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের ২৩তম দিনের সংলাপ শুরুর কথা রয়েছে।

এছাড়াও আলোচনার এজেন্ডায় রয়েছে উচ্চকক্ষ গঠন পদ্ধতি, রাষ্ট্রপতির নির্বাচন ও ক্ষমতা এবং নাগরিকের মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণের বিষয়।

কমিশনের প্রত্যাশা, আজকের মধ্যেই নিষ্পত্তি করা যাবে অমীমাংসিত প্রস্তাবগুলো। যথারীতি আজও বৈঠকে অংশ সবগুলো রাজনৈতিক দলের অংশ নেয়ার কথা রয়েছে।

নির্বাচন কমিশনে আয় ব্যয়ের হিসাব জমা দিয়েছে জাতীয় পার্টি। বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য রেজাউল ইসলাম ভূইয়া নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদের কাছে ২০২৪ সালের অডিট রিপোর্ট জমা দেন।

২০২৪ সালে দলটির আয় ব্যায়ের হিসাবে দেখা গেছে, গত বছরে জাপার বার্ষিক আয় ২ কোটি ৬৪ লক্ষ ৩৮ হাজার ৯৩৮ টাকা। অন্যদিকে ব্যয় ১ কোটি ৭৯ লক্ষ ৮৮ হাজার ৪৪ টাকা। আয়ের খাতে কর্মীদের চাঁদা, প্রকাশনা ও ডোনেশন দেখানো হয়েছে। আর ব্যয় হয় প্রচার কার্যক্রম, অফিস কর্মচারীদের বেতন ইত্যাদি খাতে।

এসময় জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য রেজাউল ইসলাম ভূইয়া বলেন, আওয়ামী লীগের সাথে নির্বাচন করার জন্য জাপাকে ফ্যাসিস্ট এর দোসর বলা হচ্ছে এটি গ্রহণযোগ্য নয়। বিএনপিও বিগত নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল। জাপাকে অবৈধ বলার দাবি উঠলে বিএনপিসহ বাকিদলগুলোকেও অবৈধ বলতে হবে।

আগামী নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হলে জাপা অংশ নিবে বলেও জানান তিনি। বিগত তিন নির্বাচনে অংশগ্রহনের দায়ে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করলে ২০১৮ এর নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য বিএনপিসহ ৩১ টি দলকে নিষিদ্ধ করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, আরপিও অনুযায়ী রাজনৈতিক দল নিবন্ধিত হয়। সেখানের কোন শর্ত জাপা লঙ্ঘন করেনি। এছাড়া কমিশনকে এখন পর্যন্ত পুরোপুরি নিরপেক্ষ বা পক্ষপাতদূষ্ট বলার পক্ষে নয় জাপা, যেহেতু এখনও তারা নির্বাচন করেনি।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে জাপা আয় করে ২ কোটি ২২ লাখ দুই হাজার ৪০৫ টাকা। আর ব্যয় করে এক কোটি ১৩ লাখ ১৮ হাজার ৫২৫ টাকা। ২০২২ সালে তাদের আয় হয় ২ কোটি ২৯ লাখ ১৪ হাজার ৯৬৮ টাকা। ব্যয় হয় ১ কোটি ২৮ লাখ ৩৭ হাজার ৫৪২ টাকা। ব্যাংকে স্থিতি ছিল ১ কোটি ৭ লাখ ৭৭ হাজার ৪২৬ টাকা। অর্থাৎ ২০২৪ সালে তাদের আয় ও ব্যয় দুটোই বেড়েছে।

তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের বিবাদ মেটাতে ৭ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা আ ফম খালিদ হোসেন।

আজ বুধবার (৩০ জুলাই) সচিবালয়ে নিজ দফতরে তাবলিগের দুই পক্ষের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা জানান। বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন।

ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, কমিটিতে দুই পক্ষের প্রতিনিধি থাকবেন। আশা করি, এই কমিটির মাধ্যমে উভয় পক্ষ সমঝোতায় পৌঁছাতে পারবে। সামনে সংঘাতের পথ বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা এটাই চাচ্ছি।

দুই পক্ষের একসাথে ইজতেমা করা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, একসাথে ইজতেমা করা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। কমিটি গঠন করা হচ্ছে। আশা করি, দুপক্ষের মধ্যকার সংকট কমে যাবে।

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় ধর্ম অবমাননাকে কেন্দ্র করে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বসতবাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ধর্ম নিয়ে কটাক্ষ করা ঠিক নয়। এতে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। রংপুরের গঙ্গাচড়ায় যে কটুক্তি করেছে, তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে যারা বাড়িঘরে ভাংচুর চালিয়েছে, তাদের এটা করা ঠিক হয়নি। এ নিয়ে মামলা করা হলে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের তাদের ‘এক্সিট’ নিয়ে ভাবনার সময় এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে ডেমোক্রেসি ডায়াস বাংলাদেশের এক সেমিনারে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

দেবপ্রিয় বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপ পরবর্তী সরকার কতটা বৈধতা দেবে, তাও চিন্তা করতে হবে। সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া- যতটুকু না করলেই নয় ততোটুক সংস্কার করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

একই অনুষ্ঠানে সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল বলেন, সংস্কারের নামে সময়ক্ষেপণ করে নির্বাচন পিছিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে সরকার। নির্বাচন অক্টোবরে হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি। বলেন, পিআর পদ্ধতি ভালো হলেও এখন তা সময়োপযোগী নয়।

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা মোবারক হোসেনকে খালাস দিয়েছেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদণ্ডের রায় বাতিল করা হয়েছে।

আজ বুধবার (৩০ জুলাই) খালাস চেয়ে মোবারক হোসেনের করা আপিল মঞ্জুর করে এ রায় দেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ।

মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ২০১৪ সালের ২৪ নভেম্বর মোবারক হোসেনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে সর্বোচ্চ সাজা কার্যকরের আদেশ দেয়া হয়।

সেই রায়ে বলা হয়, একাত্তরে মোবারক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রাজাকার বাহিনীর অন্যতম সদস্য ছিলেন। তার বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগের মধ্যে দুটি প্রমাণিত হয়। এর একটিতে মৃত্যুদণ্ড এবং অপরটিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।

পরে মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস চেয়ে মোবারক হোসেন আপিল করেন। তিনি ২০১২ সাল পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। পরে তাকে বহিষ্কার করা হয়।

সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও অর্থলগ্নি প্রতিষ্ঠান, সরকারি মঞ্জুরিপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণে ‘জাতীয় বেতন কমিশন, ২০২৫’ গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

সাবেক অর্থসচিব জাকির আহমেদ খানকে সভাপতি করে রোববার (২৭ জুলাই) এ প্রজ্ঞাপন জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়।

কমিশনে তিনজন পূর্ণকালীন সদস্য এবং ১৯ জন খণ্ডকালীন সদস্য রাখা হয়েছে। কমিশনের প্রথম সভা থেকে পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দেবে এই কমিশন।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়– সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ধারা ১৫-এ দেয়া ক্ষমতাবলে জাতীয় বেতনস্কেলের আওতাভুক্ত প্রজাতন্ত্রের সব শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ‘জাতীয় বেতন কমিশন, ২০২৫’ গঠন করা হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, সাবেক অর্থসচিব জাকির আহমেদ খানকে সভাপতি করে সাবেক সচিব ড. মোহাম্মদ আলী খান, সাবেক হিসাব মহানিয়ন্ত্রক মো. মোসলেম উদ্দীন এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত মো. ফজলুল করিমকে কমিশনের পূর্ণকালীন সদস্য করা হয়েছে।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় জাতীয় বেতন কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক থেকে ওয়াকআউট করেছে বিএনপি। সোমবার (২৮ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দিনের শুরুতে চারটি সংস্থার নিয়োগ ইস্যুতে আলোচনা শুরু হয়। সেই আলোচনা থেকে ওয়াকআউট করে বিএনপি।

রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার ২০তম দিনের মতো আলোচনা শুরু হয় সকালে। আলোচনার বিষয়বস্তু সরকারি কর্মকমিশন, দুদক, মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এবং ন‍্যায়পাল নিয়োগের বিধান। আলোচনায় অংশ নেয়নি বিএনপি। তবে পরের আলোচনায় সংসদে নারী প্রতিনিধিত্বের বিষয়ে অংশ নিবে দলটির প্রতিনিধিরা।

আলোচনার শুরুতে কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, আজকের মধ্যে জুলাই সনদের খসড়া পাঠিয়ে দেওয়া হবে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে। এখনো সনদ চূড়ান্ত হয়নি। যেখানে সনদের প্রেক্ষাপট ও পটভূমি থাকবে। রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য ঠিক করার মতো অনেক মৌলিক বিষয়ে আলোচনা হলেও সমাধান হয়নি।

এর আগে, ২৩ জুলাই রাজধানীর উত্তরা দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তে হতাহতের ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হামলার প্রতিবাদে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ থেকে প্রতীকী ওয়াকআউট করে সিপিবিসহ তিন দল। ওইদিন অধিবেশন শুরুর সঙ্গে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানান।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলায় ৩০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি আজ। প্রসিকিউশন বলছে, তারা সব আসামির বিচার শুরুর আবেদন জানাবেন।

মামলায় গ্রেফতার চার আসামি বেরোবির সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, পুলিশের সাবেক সহকারী উপপরিদর্শক আমির হোসেন, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় ও ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরীসহ মোট ৬ জনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে৷

এর আগে গত ৩০ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। ওইদিন ৩০ আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল-২।

গত ২২ জুলাই রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়-বেরোবির সাবেক ভিসি, রংপুরের সাবেক পুলিশ কমিশনারসহ ২৪ জনকে পলাতক ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২৷ এদিকে আশুলিয়ায় ৬ লাশ পোড়ানোর মামলায় ৮জন ও লক্ষ্মীপুরের একটি মামলায় ৩ জনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে।