চার দিনের যুক্তরাজ্য সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

শনিবার (১৪ জুন) সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে তাকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এর আগে, শুক্রবার লন্ডনের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন প্রধান উপদেষ্টা ও তার সফরসঙ্গীরা।

সফরে প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাজ্যের হাউস অব কমন্সের স্পিকার ছাড়াও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন এবং বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লস তার হাতে তুলে দেন ব্রিটেনের মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার ‘কিংস চার্লস হারমনি’ অ্যাওয়ার্ড।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গেও গতকাল বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। বৈঠক শেষে এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশে রাজনৈতিক উত্তেজনা, নির্বাচনের সময় নিয়ে জটিলতা এবং সরকার ও অন্যান্য দলের সঙ্গে টানাপড়েনের মধ্যেই হলো এই বৈঠক, যার ওপর গোটা দেশের মানুষের নজর ছিল।

উল্লেখ্য, গত ৯ জুন যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার জেরে বিশ্ববাজারে বেড়েই চলেছে জ্বালানি তেলের দাম। শুক্রবার (১৩ জুন) ইরানে হামলার পর একলাফে অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়েছে ১০ শতাংশ।

আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থাগুলো বলছে, গত পাঁচ মাসেরও বেশি সময়ের মধ্যে এবারই সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে তেলের দাম। এর ফলে কেবল যানবাহনে জ্বালানি খরচ নয়, খাদ্যপণ্যের দাম থেকে শুরু করে প্রভাব ফেলতে পারে পুরো অর্থনীতিতে।

এমন অবস্থায় সারাবিশ্বে জ্বালানি সরবরাহে বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কাও করছেন অনেকে। ব্রেন্ট ক্রুডের দাম বৃহস্পতিবারের তুলনায় ৭ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি দাঁড়িয়েছে ৭৪ দশমিক ২ ডলারে।

চার দিনের যুক্তরাজ্য সফর শেষে দেশের উদ্দেশে লন্ডন ছেড়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। লন্ডনের স্থানীয় সময় ৭টা ১৫ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে তিনি চার দিনের সফর শেষে রওনা হন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

এদিকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার কাজের অগ্রগতিসহ আগামী জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে নিয়ে তখন এ দুই নেতা কথা বলেন।

শুক্রবার (১৩ জুন) বাংলাদেশ সময় দুপুর দুইটার দিকে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে হোটেল ডরচেস্টারে প্রধান উপদেষ্টা ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের মধ্যে বৈঠকটি শুরু হয়। যা চলে প্রায় দেড় ঘণ্টা মতো। এরপর বৈঠকের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার ও বিএনপি যৌথ বিবৃতি দেয়। যা প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজেও প্রকাশ করা হয়েছে।

এ সময় প্রধান উপদেষ্টার কাছে আগামী রমজানের আগে নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রস্তাব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও মনে করেন ওই সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ভালো হয়, তা উল্লেখ করেন তারেক রহমান।

জবাবে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, তিনি আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন। সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে ২০২৬ সালের রমজান শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেও নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে।

সেক্ষেত্রে রমজানের আগে নির্বাচন আয়োজনে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি‌ অর্জন করা প্রয়োজন হবে বলেও মত দেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

দেশে রাজনৈতিক উত্তেজনা, নির্বাচনের সময় নিয়ে জটিলতা এবং সরকার ও অন্যান্য দলের সঙ্গে টানাপড়েনের মধ্যেই হলো এই বৈঠক, যার ওপর গোটা দেশের মানুষের নজর ছিল।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, মাঠ পর্যায়ের পুলিশের কাছে রাইফেলের মতো অস্ত্র থাকবে। আর এপিবিএনের মতো বিশেষায়িত ইউনিটের কাছে ভারী অস্ত্র থাকবে।

শনিবার (১৪ জুন) সকালে রাজধানীতে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন-এপিবিএন এর হেডকোয়ার্টার পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, মাঠ পর্যায়ের পুলিশের কাছে রাইফেলের মতো অস্ত্র থাকবে, ভারি মারণাস্ত্র থাকবে না। এপিবিএন, থানা পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সার্বিক উন্নয়নে সরকার কাজ করছে। অন্তর্বতী সরকারের ১১ মাসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে বলেও দাবি করে তিনি।

এসময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, দু-একটি ছোটখাটো ঘটনা ছাড়া এবারের ঈদ শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপন করেছেন দেশবাসী।

সরকারের যেকোনো কাজের দায় দায়িত্ব পুরো সরকারের। অথচ অনেকেই নির্দিষ্টভাবে শুধু আইন উপদেষ্টাকে দায়ী করছেন, যা ঠিক নয়— এমন মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। এসময় আইন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে নানা সমালোচনার মুখে পড়ছেন বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। তবে নেটিজেন কিংবা সমালোচকদের সমালোচনার সঙ্গে সরকারের ভালো কাজগুলোর প্রশংসার বেলায় তিনি উপেক্ষিত থাকেন বলেও মনে করেন তিনি।

বুধবার (১১ জুন) রাত ১১টা ২২ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেয়া এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মোট ৩টি প্যারায় তিনি দীর্ঘ এক পোস্টের প্রথম অংশে তিনি লেখেন, কয়েকদিন আগে মুক্তিযোদ্ধাদের সংজ্ঞায়ন বিষয়ক ভুল সংবাদের জেরে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। এই ঝড়ের অন্যতম শিকার হয় আমার পরিবারের সদস্যরা। দু’একজন তাদের ধিক্কার দিতে থাকে, কীভাবে এই আইন করলাম আমি! তারা বলে, এটা তো মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় করেছে! কিন্তু সমালোচকরা নাছোড়বান্দা! না, আইনটিতে তো লেখা আছে আইন মন্ত্রণালয়ের নাম।

আমি জানি, এরকম বহু শিক্ষিত মানুষ আছে সমাজে। তাদের কাছে সবিনয়ে বলি, অন্য যে কোনো মন্ত্রণালয় যে অধ্যাদেশই করুক না কেন, তা জারি করতে হয় আইন মন্ত্রণালয়কে। আমাদের রুলস্ অব বিজনেস অনুসারে এটাই বিধান। পৃথিবীর প্রায় সকল দেশে এটাই হয়। বাংলাদেশে এনবিআর নিয়ে যে আইনটা (অধ্যাদেশ) হয়েছে, তা করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদিত হওয়ার পর এটা জারি করতে হয়েছে আইন মন্ত্রণালয়কে। সরকারী কর্মচারীদের শৃঙ্খলা নিয়ে যে আইন, তাও করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। কিন্তু এটা জারি করতে হয়েছে আইন মন্ত্রণালয়কে। 

অধ্যাদেশ আকারে যত আইন অতীতে হয়েছে সেগুলো আইন মন্ত্রণালয় জারি করেছে। ভবিষ্যতে যেসব অধ্যাদেশ হবে সেগুলোও আইন মন্ত্রণালয়কে জারি করতে হবে। এজন্য গেজেটের প্রথম পাতায় আইন মন্ত্রণালয়ের নামই থাকবে। কিন্তু তার মানে এটি নয় যে আইন মন্ত্রণালয় আইনগুলো করেছে বা এটি আইনগুলোর প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়।

আইন মন্ত্রণালয়  নিজস্ব উদ্যোগে আইন করেছে কেবল এ মন্ত্রণালয়ের কার্যপরিধিভুক্ত বিষয়ে। যেমন, দেওয়ানি কার্যবিধির সংশোধনী আইন বা উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগ সংক্রান্ত আইনটি করেছে আইন মন্ত্রণালয়। কিন্তু অন্য কোনো মন্ত্রণালয়ের কার্যপরিধিভুক্ত বিষয়ে আইন প্রণয়নের কোনো ক্ষমতা আইন মন্ত্রণালয়ের নেই। আছে শুধু জারি করার দায়িত্ব। এটি স্রেফ আনুষ্ঠানিকতা। 

পোস্টের দ্বিতীয় অংশে আইন উপদেষ্টা লেখেন, আইন তো তবু কিছুটা খটমটে বিষয়। কিন্তু সাদামাটা, সহজবোধ্য যে কোনো বিষয়েও আমাকে নিন্দা করার প্রবণতা আছে সমাজের কিছু মানুষের মধ্যে। প্রশ্ন হচ্ছে, সরকারের যে কোনো কাজের সমালোচনা যদি আমাকে করা হয়, তাহলে যে কোনো ভালো কাজের  প্রশংসাও আমাকে কেন করা হয় না?

সাবেক রাষ্ট্রপতি কীভাবে বিদেশে গেলেন, এই দায় যদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে না দিয়ে আমাকে দেয়া হয়; তাহলে দ্রব্যমূল্য যে স্থির রয়েছে, এই প্রশংসাও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে না দিয়ে আমাকে দিতে হবে। কিন্তু এর কোনটিই আসলে করা ঠিক নয়। 

আমার কাজের জন্য নিন্দা/প্রশংসা আমাকে করবেন, অন্যের কাজের জন্য অন্যকে। যে কোনো কাজের সামগ্রিক দায়দায়িত্ব আমাদের গোটা সরকারের। কিন্তু যদি নির্দিষ্টভাবে একজন উপদেষ্টাকে দায়ী করা হয় তাহলে সেটি শুধু তার মন্ত্রণালয়ের অধিভুক্ত বিষয়ে করা উচিত। 

পোস্টের শেষ অংশে ড. আসিফ নজরুল লেখেন, যারা নিন্দা করেন, কুৎসা রটান, এরমধ্যে হয়তো কোনো আনন্দ খুঁজে পান। কিন্তু এটা অন্য কাউকে এমন কষ্ট দিতে পারে, যা আপনি নিজে কখনও বহন করতে চাইবেন না। এটি মনে রাখা ভালো।

পোস্টের একেবারে শেষে তিনি লেখেন, আমি জানি ‘অপরের মুখ ম্লান ক’রে দেওয়া ছাড়া প্রিয় সাধ নেই’- এমন মানুষ আছে সমাজে। যারা এমন না, তাদের কাছে অনুরোধ, কারও নিন্দা করার আগে একটু জেনে নিন। আল্লাহ আছেন, আমাদের সবাইকে একদিন জবাব দিতে হবে— এটি লিখে পোস্টের ইতি টানেন উপদেষ্টা।

শান্তি-স্থায়িত্ব ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় অবদানের জন্য ব্রিটেনের অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ সম্মাননা ‘কিং চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড-২০২৫’ পেতে যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ বৃহস্পতিবার (১২ জুন) লন্ডনের সেন্ট জেমস প্যালেসে হবে এই আনুষ্ঠানিকতা।

আগামীকাল শুক্রবার (১৩ জুন) বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক হওয়ার কথা।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, এই বৈঠকের কোনো ফরম্যাট নেই। তবে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, নির্বাচনের দিনক্ষণ, সংস্কার ও জুলাই চার্টারসহ যেকোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

এদিকে, সফরের দ্বিতীয় দিন বুধবার (১১ জুন) ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের পক্ষ থেকে আয়োজিত বিশেষ নৈশভোজে অংশ নেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান। কিংস ফাউন্ডেশনের ৩৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ছিল এ নৈশভোজের আয়োজন।

এর আগে, চ্যাথাম হাউস আয়োজিত সংলাপে প্রধান উপদেষ্টা জানান, ১৭ বছর পর দেশের ইতিহাসে একটি সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তাস্তর করা হবে।

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছে আরও ১২০ ফিলিস্তিনি। এর মধ্যে ত্রাণ সংগ্রহে গিয়ে হামলার শিকার হয়ে নিহত অর্ধ শতাধিক। সেইসাথে আহত হয়েছেন আরও সাড়ে তিন শতাধিক। এতে অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫৫ হাজার ছাড়াল।

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার গুলিবর্ষণ ও বিমান হামলায় গত এক দিনে ১২০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে বহু মানুষ রয়েছেন যারা ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। সেইসাথে, যুদ্ধের শুরু থেকে এ পর্যন্ত গাজায় নিহতের সংখ্যা ৫৫ হাজার পেরিয়েছে বলেও জানায় সংবাদমাধ্যমটি।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বুধবার সকাল থেকে এখন পর্যন্ত ৫৭ জন ত্রাণ সংগ্রহকারী নিহত এবং ৩৬৩ জন আহত হয়েছেন। এসব ঘটনা ঘটেছে এমন সব বিতরণকেন্দ্রে, যেগুলো পরিচালনা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ (জিএইচএফ) নামের একটি বিতর্কিত সংস্থা। এই বিতরণকেন্দ্রগুলো গাজায় ইসরায়েল নিয়ন্ত্রিত এলাকায় অবস্থিত। আর সেখানেই বারবার এমন হামলার ঘটনাগুলো ঘটছে।

এত প্রাণহানির পরও ত্রাণ বিতরণ কর্তৃপক্ষ ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’-এর কাজকে বড় সাফল্য আখ্যা দিয়েছে ইসরায়েল।

অপরদিকে, ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলার ঘটনায় আবারও নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ। তবে হামলার কথা অস্বীকার করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। তাদের দাবি, নেতজারিম করিডোরে শুধু সতর্কতামূলক গুলি ছোঁড়া হয়েছিল।

পরিবার-স্বজনদের সাথে কাটানো ঈদের দিনগুলো। এখন সময় কাজে ফেরার। টানা ছুটির শেষের দিনগুলোতে ধীরে ধীরে রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছে কর্মজীবী মানুষেরা।

আজ বৃহস্পতিবার (১২ জুন) ভোর থেকেই রাজধানীমুখী মানুষের কিছুটা চাপ লক্ষ্য করা যায় কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে।

চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা থেকে যাত্রীরা ঢাকায় প্রবেশ করেন। তারা জানান, ঝক্কি-ঝামেলা ছাড়াই এবারের ঈদ পার করতে পেরেছেন। রেলে কালোবাজারি না থাকায় দুর্ভোগ কমেছে বলেও জানান যাত্রীরা।

অনেকে ঢাকায় ঈদ উদযাপন করতে এসেছিলেন, তারাও ফিরে যাচ্ছেন নিজ কর্মস্থলে। টানা ছুটির অষ্টম দিনেও বিপুল সংখ্যক মানুষকে রাজধানী ছাড়তে দেখা যায়।

এবারের ঈদে দীর্ঘ ছুটি (টানা ১০ দিন) থাকায় স্বস্তিতে বাড়ি যায় কর্মজীবীরা। ঈদ শেষে ধীরে ধীরে ফিরছেন তারা।

মধ্যরাতে শেষ হয়েছে সাগরে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকারে ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা। এর ফলে দীর্ঘদিন পর সরগরম হয়ে উঠেছে জেলেপল্লী ও মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রগুলো।

আজ বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সকাল থেকে সাগরে ফিশিং বোট ও জাল নিয়ে মাছ শিকার শুরু করেছেন ভোলার জেলেরা। কেউ কেউ মধ্যরাত থেকেই সাগরের উদ্দেশে রওনা হন। সমুদ্র উপকূলীয় জেলে পল্লীগুলোয় ফিরেছে কর্মচাঞ্চল্য।

জেলেরা জানান, নিষেধাজ্ঞার সময় তারা কর্মহীন ছিলেন। ধার-দেনা করে সংসার চালাতে হয়েছে তাদের। এখন নিষেধাজ্ঞা শেষে মাছ শিকার করে ধার-দেনা পরিশোধ করে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন তাদের।

উল্লেখ্য, ভোলার সাত উপজেলায় সাগরে মাছ শিকার করা নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা কমপক্ষে ৬৪ হাজার।

এর আগে, গত ১৫ এপ্রিল থেকে ৫৮ দিন সমুদ্র ও উপকূলীয় এলাকায় মাছধরা, পরিবহণ, সংরক্ষণ ও বিক্রয় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ছিল। ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছের টেকসই উৎপাদন নিশ্চিত করতে ২০১৫ সাল থেকে প্রতি বছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আসছিল সরকার। তবে এই সময়ে প্রতিবেশী দেশ ভারতের জেলেরা সমুদ্রে মাছ শিকার করত।

ফলে বাংলাদেশের নিষেধাজ্ঞাটা পুরোপুরি লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হতো বলে অনেকের ধারণা। এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে ১৫ এপ্রিল থেকে ৫৮ দিন নিষেধাজ্ঞা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ, স্থানীয় প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগ যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করেছে।

চার দিনের সরকারি সফরে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সোমবার (৯ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে প্রধান উপদেষ্টা এবং তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী এমিরেটস এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি লন্ডনের উদ্দেশে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।

গত ৪ জুন ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রুহুল আলম সিদ্দিক এই সফর সম্পর্কে এক ব্রিফিংয়ে বলেন, প্রধান উপদেষ্টাকে রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি দেয়া হবে এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

সফরকালে অধ্যাপক ইউনূস কমনওয়েলথ এবং আন্তর্জাতিক সমুদ্র সংস্থার (আইএমও) মহাসচিবদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। সেখানে তিনি বাংলাদেশের বৃহত্তর আন্তর্জাতিক কর্মকাণ্ড তুলে ধরবেন। তিনি ১১ জুন রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স, চ্যাথাম হাউসে একটি বিশেষ ভাষণ দেবেন।

বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কের গভীরতা রয়েছে। যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার এবং দেশটির বৃহত্তম প্রবাসী জনগণের আবাসস্থল।

ড. ইউনূসের এই সফরের মধ্য দিয়ে দু’দেশের সম্পর্ক নতুন করে পুনরুজ্জীবিত হতে পারে বলে মত বিশ্লেষকদের। সেইসাথে অর্থনীতি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের মতো ক্ষেত্রগুলো আরও ঘনিষ্ঠ হবে বলেও আশা করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, আগামী ১৪ জুন সফর শেষে প্রধান উপদেষ্টা দেশে ফিরবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আগামী ১৩ জুন লন্ডনের একটি হোটেলে এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। আজ সোমবার (৯ জুন) দলটির স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

বিএনপির দুইজন স্থায়ী কমিটির সদস্য যমুনা টেলিভিশনকে জানান, তারেক রহমানের সঙ্গে ড. ইউনূসের সৌজন্য সাক্ষাৎ হলেও গুরুত্ব পাবে নির্বাচন ইস্যু। স্থায়ী কমিটি থেকে এ সংক্রান্ত কয়েকটি প্রস্তাবনা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়াও সংস্কার ইস্যুতে তৈরি কিছু জটিলতারও সমাধান আসতে পারে এই বৈঠকে। এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপির পক্ষ থেকে আগামীকাল মঙ্গলবার দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গণমাধ্যমকে বিস্তারিত ব্রিফ করবেন।

এদিকে চার দিনের সরকারি সফরে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে প্রধান উপদেষ্টা এবং তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী এমিরেটস এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি লন্ডনের উদ্দেশে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।

গত ৪ জুন ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রুহুল আলম সিদ্দিক এই সফর সম্পর্কে এক ব্রিফিংয়ে বলেন, প্রধান উপদেষ্টাকে রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি দেয়া হবে এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

সফরকালে অধ্যাপক ইউনূস কমনওয়েলথ এবং আন্তর্জাতিক সমুদ্র সংস্থার (আইএমও) মহাসচিবদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। সেখানে তিনি বাংলাদেশের বৃহত্তর আন্তর্জাতিক কর্মকাণ্ড তুলে ধরবেন। তিনি ১১ জুন রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স, চ্যাথাম হাউসে একটি বিশেষ ভাষণ দেবেন।

বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কের গভীরতা রয়েছে। যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার এবং দেশটির বৃহত্তম প্রবাসী জনগণের আবাসস্থল।

ড. ইউনূসের এই সফরের মধ্য দিয়ে দু’দেশের সম্পর্ক নতুন করে পুনরুজ্জীবিত হতে পারে বলে মত বিশ্লেষকদের। সেইসাথে অর্থনীতি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের মতো ক্ষেত্রগুলো আরও ঘনিষ্ঠ হবে বলেও আশা করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, আগামী ১৪ জুন সফর শেষে প্রধান উপদেষ্টা দেশে ফিরবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের প্রতিশ্রুতি নিয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে আত্মপ্রকাশ করে জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়া তরুণদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি— এনসিপি।

আগামী বছরের এপ্রিলে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ধরে তৃণমূলে দল গোছানোর কাজে নেমেছে দলটি। তবে নির্বাচনের আগেই বিচার এবং সংস্কারের দৃশ্যমান আগ্রগতি চায় তারা। আগামী ২ থেকে ৩ মাসের মধ্যেই দেশের প্রতিটি ওয়ার্ডে কমিটি গঠনের কথা বলছেন দলের শীর্ষ নেতারা। এমনকি দ্রুতই শেষ করতে চান দলের নিবন্ধন এবং চূড়ান্ত গঠনতন্ত্র তৈরির কাজ।

শুরু থেকেই জুলাই গণহত্যার বিচার এবং সংস্কার ইস্যুতে সরব এনসিপি। দাবি জানিয়ে আসছিল স্থানীয় সরকার ও গণপরিষদ নির্বাচনের। এর মধ্যেই জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় জানিয়ে দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। যেটিকে শর্তসাপেক্ষে স্বাগত জানিয়েছে দলটি। নেতারা বলছেন, এপ্রিলে ভোট হবে— এমনটি বিবেচনায় নিয়ে সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা।

এরমধ্যেই তৈরি হয়েছে গঠনতন্ত্রের খসড়া। যা চূড়ান্ত হবে অল্প কিছুদিনের মধ্যে। ১৫ জুনের মধ্যে নিবন্ধনের প্রক্রিয়াও শেষ করতে চায় দলটি।

দলের উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, সাংগঠনিক যে কার্যক্রম, সেখানে আমরা স্ব স্ব জায়গা থেকে সর্বোচ্চ গুরুত্বের সাথে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের সাংগঠনিক যে ভিত্তি, তা যদি রাজধানী থেকে গ্রাম পর্যন্ত পৌঁছায়, তাহলে এটি নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রস্তুতি সম্পন্নেরও একটা ধাপ হিসেবে বিবেচিত হবে। চলতি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যেই আমরা নিবন্ধন প্রক্রিয়ার কাজগুলো শেষ করার চেষ্টা করবো।

এদিকে, দেশ-জনগণ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে, নির্বাচনের আগেই জুলাই সনদ-বিচার এবং সংস্কারের কাজ দৃশ্যমান চায় এনসিপি।

দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, আমরা দলের এক সাধারণ সভায় গঠনতন্ত্র নিয়ে আলোচনা করেছি। অল্প সময়ের মধ্যেই আমরা এটি চূড়ান্ত করতে পারবো। নির্বাচন আয়োজনের পূর্বেই সরকার যেনো তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্বকে যথাযথভাবে পালন করতে পারে সেদিকেও দৃষ্টি থাকবে আমাদের।

উল্লেখ্য, রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর, ২২টিরও বেশি জেলায় কমিটি গঠন করেছে এনসিপি। শতাধিক উপজেলা কমিটি-ও ঘোষণা করেছে তারা।