দীর্ঘ ১৩ বছর পর রাশিয়ার শীর্ষ শত্রুর তালিকা থেকে ৪ নম্বরে নেমে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র। ডোনাল্ড ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর মস্কো ও ওয়াশিংটনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের আশায় রাশিয়ার বেশিরভাগ নাগরিক এখন আর যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের দেশের প্রধান শত্রু হিসেবে বিবেচনা করে না। গত বৃহস্পতিবার (৫ জুন) প্রকাশিত লেভাডা সেন্টারের এক জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে। এক প্রতিবেদনে রুশ সংবাদমাধ্যম মস্কো টাইমস এ তথ্য জানায়।

এ বছর রাশিয়ার প্রতি সবচেয়ে শত্রুভাবাপন্ন দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের নাম উল্লেখ করা উত্তরদাতাদের সংখ্যা প্রায় অর্ধেক কমে ৪০% হয়েছে, যা ২০২৪ সালে ছিল ৭৬%।

রুশ উত্তরদাতাদের মতে, এখন সবচেয়ে শত্রুভাবাপন্ন দেশের তালিকায় শীর্ষ তিনে আছে জার্মানি (৫৫%), যুক্তরাজ্য (৪৯%) এবং ইউক্রেন (৪৩%)।

এই দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন এসেছে ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট পদে দায়িত্ব গ্রহণের পর, যিনি নির্বাচনী প্রচারে ইউক্রেন যুদ্ধ দ্রুত শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। মার্চ মাসে, রাশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব দ্বিগুণ বেড়েছে বলে লেভাডা সেন্টার জানিয়েছে।

গত কয়েক মাসে রুশ রাষ্ট্রীয় মিডিয়া ট্রাম্পকে মস্কোর সাথে সংলাপে আগ্রহী একজন ব্যবহারিক নেতা হিসেবে চিত্রিত করেছে। একই সময়ে, ঐতিহাসিকভাবে বৈশ্বিক ঘটনাবলীর প্রেক্ষাপটে রাশিয়ার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি মনোভাব ওঠানামা করেছে।

২০০৮ সালে রুশ-জর্জিয়ান যুদ্ধের পর বুশ প্রশাসন মস্কোর কর্মকাণ্ডের নিন্দা করে এবং জর্জিয়াকে মানবিক সহায়তা পাঠালে রুশদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইতিবাচক ধারণা ব্যাপকভাবে কমে যায়। তবে, লেভাডার তথ্য অনুযায়ী, পরবর্তীতে এই ইতিবাচক মনোভাব ফিরে আসে এবং তিন বছর পর ৬৩% এ পৌঁছায়।

২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখল এবং ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রতি রাশিয়ার সমর্থনের পর একই রকম নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়, যার জেরে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

লেভাডা সেন্টারের সর্বশেষ জরিপে রাশিয়ার ‘সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও মিত্র’ দেশ হিসেবে উত্তরদাতাদের তালিকায় উঠে এসেছে বেলারুশ (৮০%), চীন (৬৪%), কাজাখস্তান (৩৬%), ভারত (৩২%) এবং উত্তর কোরিয়া (৩০%)।

গত বছরের তুলনায় এই তালিকায় বিশেষ পরিবর্তন না এলেও, উত্তর কোরিয়ার নাম উল্লেখ করা উত্তরদাতাদের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। রুশ রাষ্ট্রীয় মিডিয়ার দাবি অনুযায়ী, উত্তর কোরিয়ার সৈন্যরা ইউক্রেনীয় দখলদার বাহিনী থেকে রাশিয়ার কার্স্ক অঞ্চল ‘মুক্ত’ করতে সাহায্য করেছিল।

অন্যদিকে, ইরানকে প্রধান মিত্র হিসেবে উল্লেখ করা উত্তরদাতাদের সংখ্যা ২০২৪ সালের ২২% থেকে কমে ১১% হয়েছে।

লেভাডা সেন্টার গত ২২ থেকে ২৮ মে পর্যন্ত ১ হাজার ৬শ’ ১৩ জন রুশ প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে এই জরিপটি পরিচালনা করে।

এই প্রতিবেদনের একটি পূর্ববর্তী সংস্করণে উল্লেখ করা হয়েছিল যে লেভাডা সেন্টারের মতে, ২০ বছরে প্রথমবারের মতো রুশদের প্রধান শত্রু দেশের তালিকায় যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষস্থান হারিয়েছে। বাস্তবে, ২০১২ সাল বা ১৩ বছর পর প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র এই তালিকায় প্রথম স্থানে নেই। এই ভুলটি সংশোধন করে প্রতিবেদনটি আপডেট করা হয়েছে।

কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোটায় একজন রাষ্ট্রপতি প্রার্থীকে তিনবার গুলি করা হয়েছে, যার মধ্যে তার মাথায় গুলি লাগে দুই বার। তার নাম মিগুয়েল উরিবে টারবে (৩৯)। তিনি দেশটির রাজনৈতিক দল ‘সেন্ট্রো ডেমোক্রেটিক পার্টি’র সাথে জড়িত।

শনিবার (৭ জুন) একটি পার্কে বক্তৃতা দেয়ার সময় আক্রমণের শিকার হন তিনি। স্থানীয় গণমাধ্যমের সূত্রমতে, ঘটনাস্থল থেকে ১৫ বছর বয়সী এক সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রোববার (৮ জুন) সকালে এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

অনলাইনে শেয়ার করা ফুটেজে দেখা যায়, বক্তৃতার মাঝখানে যখন তাকে মাথায় গুলি করা হয়েছিল। তখন উপস্থিত লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।

সংবাদসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, প্যারামেডিকদের মতে তার হাঁটুতে এবং মাথায় দু’বার গুলি করা হয়েছে। পরে তাকে সান্তে ফে ক্লিনিকে বিমানে করে নিয়ে যাওয়া হয়। আর তার সমর্থকরা জাগরণের জন্য বাইরে জড়ো হচ্ছিলেন।

উরিবের স্ত্রী মারিয়া ক্লডিয়া তারাজোনা জানান, মিগুয়েল বর্তমানে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। এ সময়, তিনি জাতির কাছে তার স্বামীর জন্য প্রার্থনা করার অনুরোধও জানান।

উরিবের ‘সেন্ট্রো ডেমোক্রেটিক পার্টি’ এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছে, এটি ‘কলম্বিয়ার গণতন্ত্র এবং স্বাধীনতা’ বিপন্ন করে তুলেছে।

অপরদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এই গুলিবর্ষণের ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন এবং একে ‘গণতন্ত্রের জন্য সরাসরি হুমকি’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

উল্লেখ্য, উরিবে আগামী বছরের অক্টোবরে অনুষ্ঠিতব্য রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তার প্রার্থীতা ঘোষণা করেছেন। তিনি কলম্বিয়ার একটি বিশিষ্ট রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য, যার সম্পর্ক রয়েছে দেশটির লিবারেল পার্টির সাথে। তার বাবা ছিলেন একজন ইউনিয়ন নেতা এবং ব্যবসায়ী। আর তার মা ডায়ানা টার্বে ছিলেন একজন সাংবাদিক।

মিনায় অবস্থানের মধ্য দিয়ে আজ শুরু হচ্ছে পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা। এরইমধ্যে তাবুর শহর হিসেবে পরিচিত মিনায় পৌঁছাতে শুরু করেছেন মুসল্লিরা। এক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যম আরব নিউজ এ তথ্য জানায়।

নিয়ম অনুযায়ী, আজ মঙ্গলবার (৭ জিলহজ) সন্ধ্যার পর মক্কার পবিত্র মসজিদুল হারাম বা নিজ আবাসন থেকে হজের নিয়ত করে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরে মিনার উদ্দেশে রওনা হবেন হজযাত্রীরা।

ইতিমধ্যে ‘তাবুর শহর’ খ্যাত মিনায় পৌঁছেছেন লাখো মুসল্লি। সৌদি কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ৪ লক্ষাধিক হাজী মিনায় অবস্থান করছেন। ‘লাব্বায়েক আল্লাহুম্মা লাব্বায়েক’ ধ্বনিতে মুখরিত মিনা উপত্যকা, যা হজের পবিত্র আবহকে আরও গভীর করছে।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৩ জুন) রাতেই ইহরাম বেঁধে মক্কা থেকে মিনার উদ্দেশে রওনা হন ধর্মপ্রাণ অনেক মুসলমান। রাত্রি যাপন শেষে বৃহস্পতিবার (৫ জুন) রওনা হবেন আরফাতের ময়দানের উদ্দেশে। সেখানেই অনুষ্ঠিত হবে হজের খুতবা।

আরাফাতে অবস্থানকেই মূলত হজ হিসেবে ধরা হয়। এবার বিশ্বের নানা প্রান্তের প্রায় ১৫ লাখ মুসল্লী হজ পালন করছেন। মুসল্লিদের হজ পালন নির্বিঘ্ন করতে কড়া নিরাপত্তাসহ নানা পদক্ষেপ নিয়েছে সৌদি সরকার।

উল্লেখ্য, প্রতিবছর জিলহজ মাসের ৮ থেকে ১৩ তারিখের মধ্যে হজের মূল আনুষ্ঠানিকতাগুলো সম্পন্ন করা হয়। এ সময়ের মধ্যে হজযাত্রীরা চার দিনের বিভিন্ন ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতায় অংশ নেন।

সৌদি আরবের ধর্মীয় বিষয়ক প্রেসিডেন্সি রবিবার (২৫ মে) ঘোষণা করেছে যে এ বছর হজে আরাফার দিনের ঐতিহাসিক খুতবা প্রদান করবেন বিশিষ্ট ইসলামিক স্কলার শেখ সালেহ বিন হুমাইদ।

সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ এক রাজকীয় ফরমানে তাকে আরাফাহর দিনে খুতবা দেয়ার অনুমোদন দেন। আগামী ৯ জিলহজ আরাফাতের ময়দানে হজের খুতবাহ দেবেন তিনি।

পাকিস্তানের করাচির একটি কারাগার থেকে স্থানিয় সময় সোমবার (২ জুন) রাতে ২শ’-এর বেশি বন্দি পালিয়ে গেছে। স্থানীয় কর্মকর্তা ও পুলিশ জানিয়েছেন, দেশটিতে একাধিক ভূমিকম্পের পর আতঙ্কে বন্দিদের তাদের নিজ নিজ সেল থেকে বের হতে দেয়া হলে সুযোগ বুঝে তারা জেল গার্ডদের ওপর হামলা চালিয়ে পালিয়ে যায়। এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানায়।

দেশটির প্রাদেশিক আইনমন্ত্রী জিয়া-উল-হাসান লঞ্জার মঙ্গলবার (৩ জুন) ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের বলেন, ভূমিকম্পের কম্পনের কারণে জেল কর্তৃপক্ষ বন্দিদের মালির জেলা কারাগারের আঙিনায় নিয়ে যাওয়ার পর রাত ১২টার আগেই পালানোর ঘটনা শুরু হয় এবং তা মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত চলতে থাকে।

পুলিশ জানায়, কয়েদিরা জেল কর্মীদের কাছ থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নেয় এবং গুলিবিনিময়ের পর মূল গেট ভেঙে প্যারামিলিটারি বাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে বেরিয়ে যায়। .

প্রাদেশিক পুলিশ প্রধান গোলাম নবী মেমন বলেন, এতে অন্তত একজন কয়েদি নিহত ও তিনজন গার্ড আহত হয়েছেন।

কারাগারের বিপরীতের একটি আবাসিক কমপ্লেক্সের নিরাপত্তা কর্মী বখ্শ বলেন, ‘আমি বেশ কিছুক্ষণ গুলির শব্দ শুনেছি, তারপর কিছুক্ষণ পর দেখি কয়েদিরা সব দিকে ছুটে পালাচ্ছে।

তিনি এও বলেন, কিছু কয়েদি পুলিশের হাতে আটক হওয়ার আগে আবাসিক কমপ্লেক্সে প্রবেশ করেছিল।

মঙ্গলবার (৩ জুন) কারাগার পরিদর্শনকালে একজন রয়টার্স প্রতিবেদক ভাঙা কাচ ও ক্ষতিগ্রস্ত ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম দেখতে পান। কয়েদিদের পরিবারের সাথে দেখা করার একটি কক্ষ লুটপাটের শিকার হয়েছিল। উদ্বিগ্ন আত্মীয়স্বজনরা কারাগারের বাইরে জড়ো হয়েছিলেন।

লঞ্জার বলেন, এটি পাকিস্তানের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জেল পালানোর ঘটনাগুলোর একটি। করাচির মালির জেলাটিতে ৬,০০০ কয়েদি রয়েছে।

স্থানীয় টিভির ফুটেজে দেখা গেছে, সারারাত ধরে কয়েদিরা এলাকায় ছুটে বেড়াচ্ছিল, কেউ কেউ খালি পায়ে, আর পুলিশ তাদের পিছু নিয়েছিল। প্রাদেশিক মুখ্যমন্ত্রী মুরাদ আলী শাহ বলেন, পালানো কয়েদিদের মধ্যে প্রায় ৮০ জনকে আটক করা হয়েছে।

জেল সুপারিনটেন্ডেন্ট আরশাদ শাহ সাংবাদিকদের বলেন, রাতে ২৮ জন জেল গার্ড ডিউটিতে ছিলেন এবং এতো বিপুল সংখ্যক কয়েদির মধ্যে মাত্র কয়েকজন পালাতে পেরেছে।

তবে তিনি স্বীকার করেন যে ওই কারাগারে নিরাপত্তা ক্যামেরা নেই।

জেল কর্মকর্তারা জানান, অনেক বন্দি হেরোইন ব্যবহারকারী ছিল এবং ভূমিকম্পের কারণে তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। লঞ্জার বলেন, ‘ভূমিকম্পের কম্পনের কারণে এখানে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।’

প্রাদেশিক মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কয়েদিদের সেল থেকে বের হতে দেয়া জেল কর্তৃপক্ষের একটি ভুল ছিল। তিনি এখনও পালিয়ে থাকা কয়েদিদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানান, নতুবা জেল ভেঙে পালানোর জন্য তাদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনা হবে। শাহ বলেন, ‘ছোট অপরাধের অভিযোগও সন্ত্রাসবাদ মামলার মতো বড় হয়ে দাঁড়াবে।’

‘হজ ২০২৫’-এর জন্য ব্যাপক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে মক্কায় একটি বড় আকারের নিরাপত্তা বাহিনীর কুচকাওয়াজ ও সামরিক মহড়ার আয়োজন করেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে বছরের বৃহত্তম ধর্মীয় সমাবেশে লাখ লাখ হাজিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাজ্যের প্রস্তুতির জানান দেয়া হয়েছে। রোববার (২ মে) এক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ এ তথ্য জানায়।

দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স আব্দুল আজিজ বিন সৌদের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত এই কুচকাওয়াজে হেলিকপ্টারে আকাশপথে প্রদর্শনী এবং বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর কৌশলগত দক্ষতা প্রদর্শিত হয়েছে। হজ উপলক্ষে ৪০ হাজারের বেশি নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

হজ শুরুর পূর্বে সৌদি আরবের নিরাপত্তা বাহিনীর প্রস্তুতি পরীক্ষা ও নিশ্চিত করাই এই মহড়ার মূল লক্ষ্য। হজ নিরাপত্তা কুচকাওয়াজটি একটি প্রতীকী জাতীয় সংকল্প এবং মক্কা, মদিনা, মিনা, আরাফাত ও মুজদালিফায় ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের বিশাল সমাগমে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একটি ব্যবহারিক অনুশীলন।

দেশটির পাবলিক সিকিউরিটির ডিরেক্টর ও হজ নিরাপত্তা কমিটির চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোহাম্মদ আল বাসামি বলেছেন, ‘হজ নিরাপত্তা একটি ‘রেড লাইন’। আমাদের বাহিনী আল্লাহর অতিথিদের শান্তি বিঘ্নিত করতে পারে এমন যেকোনো কিছুর মুখোমুখি হতে সর্বোচ্চ দৃঢ়তা ও শক্তি প্রয়োগের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত। আমরা চেষ্টা করবো হাজিরা যাতে সহজে ও স্বাচ্ছন্দ্যে তাদের ধর্মীয় রীতি পালন করতে পারে।’

ভিড় নিয়ন্ত্রণ, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, নজরদারি ও দ্রুত প্রতিক্রিয়া ব্যবস্থা ছাড়াও ফেসিয়াল রিকগনিশন সিস্টেম, ড্রোন ও স্মার্ট মনিটরিং প্ল্যাটফর্মের মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করা হবে এবারের হজে।

প্রবল বর্ষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল। আসাম, মেঘালয়, মণিপুর, অরুণাচল প্রদেশ, মিজোরামের মতো রাজ্যগুলোতে গত দু’দিনে বৃষ্টি, বন্যা ও ভূমিধসের কারণে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৩২ জনের। রোববার (১ মে) এক প্রতিবেদনে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এ তথ্য জানায়।

বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গ এবং সংলগ্ন মেঘালয়ের ওপর সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপের কারণে এই ভয়াবহ দুর্যোগের সৃষ্টি হয়। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত আসাম, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড ও অরুণাচল প্রদেশ।

গত কয়েকদিন ধরে অবিরাম বৃষ্টিপাতের ফলে আসামের ১৭টি জেলায় বন্যা ও ভূমিধসে আটজন নিহত এবং ৭৮ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ব্যাপক বৃষ্টিপাতে ধসে পড়েছে অনেক ঘরবাড়ি; প্লাবিত বহু এলাকা। পাহাড়ি এলাকায় হয়েছে ভূমিধস।

আসামের ১২টি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত। অন্যান্য রাজ্যগুলোয় হতাহত বহু মানুষ। বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে অনেক পরিবার। বিভিন্ন স্থানে বন্ধ অফিস ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কিছু অংশে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করেছে, আগামী কয়েক দিন আরও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

এদিকে, ব্যাপক জলাবদ্ধতার কারণে গুয়াহাটির কিছু অংশ টানা দ্বিতীয় দিনের মতো প্লাবিত হয়েছে, যার ফলে উদ্ধারকারী দল আটকে পড়া বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে।

ভারতীয় সামরিক বাহিনী প্রথমবারের মতো স্বীকার করেছে যে পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষে তাদের কয়েকটি যুদ্ধবিমান হারিয়েছে। তবে, তারা জোর দিয়ে বলেছে যে এই চারদিনের সংঘর্ষ কখনোই পারমাণবিক যুদ্ধের দিকে এগোয়নি।

শনিবার (৩১ মে) সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত শ্যাংগ্রি-লা ডায়ালগ সম্মেলনে ব্লুমবার্গ টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল অনিল চৌহান এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

পাকিস্তানের দাবি যে তারা ছয়টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে, তা ‘একেবারেই ভুল’ বলে মন্তব্য করেছেন জেনারেল চৌহান। তবে, তিনি ভারতের কতটি বিমান হারিয়েছে তার সঠিক সংখ্যা উল্লেখ করেননি।

তিনি বলেন, ‘যুদ্ধবিমান হারানোর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, সেগুলো কীভাবে হারালো, কী ভুল হয়েছিল—সেই বিশ্লেষণ। সংখ্যা গুরুত্বপূর্ণ নয়।’

জেনারেল চৌহান বলেন, ‘ভালো দিক হলো, আমরা আমাদের কৌশলগত ভুলগুলো বুঝতে পেরেছি, সেগুলো সংশোধন করেছি এবং মাত্র দুই দিনের মধ্যেই আবার সমস্ত যুদ্ধবিমান উড়িয়েছি; বিশেষকরে দূরপাল্লার টার্গেট করে অভিযান পরিচালনা করেছি।’

গত ৭ মে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিমান হামলা ও পাল্টা হামলার এক উত্তেজনাপূর্ণ সংঘর্ষ হয়। এর আগে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ দাবি করেছিলেন যে তার দেশ ছয়টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে, যদিও এই দাবির স্বাধীনভাবে কোনো সত্যতা যাচাই হয়নি।

ভারত সরকার এতদিন তাদের কোনো বিমান হারিয়েছে কিনা সে বিষয়ে মন্তব্য এড়িয়ে যাচ্ছিল। জেনারেল চৌহানের এই বক্তব্য ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষে বিমান ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে ভারতের পক্ষ থেকে প্রথম স্বীকারোক্তি।

জেনারেল চৌহান জোর দিয়ে বলেন যে এই সংঘর্ষ কখনোই পারমাণবিক যুদ্ধের স্তরে পৌঁছায়নি। উভয় পক্ষই সংঘাত নিয়ন্ত্রণে রেখেছে।

উল্লেখ্য, ভারতীয় সামরিক বাহিনী এখন তাদের কৌশলগত দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করে তা সংশোধনের কাজ করছে। বিশেষ করে, ড্রোন ও মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করার ওপর জোর দেয়া হচ্ছে।

পাকিস্তানের দুই প্রদেশে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর ১২ সদস্য নিহত হয়েছে। সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে প্রাণ গেছে চার সেনা সদস্যেরও। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পাকিস্তান আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর)। খবর দেশটির সংবাদমাধ্যম ডনের।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাতে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের সীমান্তবর্তী উত্তর ওয়াজিরিস্তান জেলায় টহল দিচ্ছিল নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। সহসা তাদের ওপর হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। পাল্টা গুলিবর্ষণে নিহত হয় ছয় বিচ্ছিন্নতাবাদী। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় সেনাবাহিনীর চার সদস্য। এছাড়াও, চিত্রাল জেলায় সেনা অভিযানে প্রাণ গেছে আরও এক সন্ত্রাসীর।

এর আগে, বেলুচিস্তানে নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে প্রাণ গেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত ফিতনাহ আল হিন্দুস্তান সংগঠনের পাঁচ সদস্যের।

আফগানিস্তান ও ইরান সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলো দীর্ঘদিন ধরেই নিষিদ্ধ ঘোষিত বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর শক্ত আস্তানা। সাম্প্রতিক সময়ে এসব এলাকায় অভিযানের মাত্রা বাড়িয়েছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আগুন নিয়ে খেলছেন বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

মঙ্গলবার (২৭ মে) ইউক্রেনে রাশিয়ার ভয়াবহ ড্রোন ও মিসাইল হামলার জেরে সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেয়া পোস্টে এই মন্তব্য করেন তিনি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান-এর এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানানো হয়।

ট্রাম্প দাবি করেন, তিনি প্রেসিডেন্ট না হলে রাশিয়ার সাথে আরও খারাপ কিছু ঘটতো, যা পুতিন বুঝতে পারছে না।

অপরদিকে, ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এবং সিএনএন জানিয়েছে, ট্রাম্প চলতি সপ্তাহের শুরুতেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞার কথা বিবেচনা করছেন। একই সাথে জোর দিয়ে বলেন, তিনি এখনও তার মন পরিবর্তন করতে পারেন যদি পুতিন আলোচনায় বসেন।

এর আগে, গত রোববার ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তিনি মস্কোর ওপর নিষেধাজ্ঞা বৃদ্ধির কথা বিবেচনা করছেন। তবে পুতিন চাইলে অন্য সকল বিকল্প খোলা আছে বলেও জানান তিনি। এ সময়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য জো বাইডেনকে দায়ী করে বলেন, তিনি একটি আলোচনার মাধ্যমে শান্তি চুক্তি দেখতে চান।

এর দু’দিন আগেও ইউক্রেনে রাশিয়ার সিরিজ বোমা হামলার নিন্দা জানান ট্রাম্প। বলেন, রুশ প্রেসিডেন্টের কর্মকাণ্ডে ব্যাপক নারাজ তিনি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় এখন থেকে পতাকা উত্তোলন করতে পারবে ফিলিস্তিন। ভোটে জয়লাভের পর প্রথমবারের মতো সংস্থাটিতে পতাকা তোলার অধিকার পেলো তারা।

সোমবার (২৬ মে) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয় এমন তথ্য।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বার্ষিক সম্মেলনে ফিলিস্তিনকে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে দেয়ার বিষয়ে প্রস্তাব উত্থাপন করে চীন, পাকিস্তান, সৌদি আরবসহ বেশ কয়েকটি রাষ্ট্র। অনুষ্ঠিত হয় প্রতীকী ভোটাভুটি। এতে ফিলিস্তিনের অধিকারের পক্ষে সমর্থন দেয় ৯৫টি দেশ।

অপরদিকে, বিরোধিতা করে জার্মানি, হাঙ্গেরি, চেক রিপাবলিকের মতো দেশগুলো। ভোটদানে বিরত ছিল ২৭টি দেশ। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পড়ায় গৃহীত হয় প্রস্তাবটি।

এর ফলে ধারণা করা হচ্ছে, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থাসহ রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিনের স্বীকৃতি মেলার পথ আরও সুগম করবে এই ঘটনা।

ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কার্যক্রমকে সমর্থন দিলো পাকিস্তান। সোমবার (২৬ মে) তেহরানে এক রাষ্ট্রীয় সফরে এই ঘোষণা দেন পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। খবরটি নিশ্চিত করেছে ইরানের সরকারি বার্তাসংস্থা আইআরএনএ।

শাহবাজ শরিফ বলেন, বেসামরিক আর শান্তিপূর্ণ খাতের জন্য তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে সমর্থন করে ইসলামাবাদ। সেইসাথে, এটি ইরানের অধিকার বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এর আগে, ইরানি প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সাথে বৈঠক করেন তিনি। এ সময়, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার পাশাপাশি পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রত্যয় ব্যক্ত করেন দুই নেতা।

ইরানের প্রেসিডেন্টের সাথে আলোচনা ফলপ্রসূ ও গঠনমূলক হয়েছে উল্লেখ করে পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী বলেন, আলোচনায় দু’দেশের পারস্পরিক স্বার্থ ও সহযোগিতার বিভিন্ন দিক উঠে এসেছে। উভয় পক্ষই রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সম্প্রসারণ নিয়ে সম্মত হয়েছে। সেইসাথে, পূর্বে স্বাক্ষরিত চুক্তিসমূহ বাস্তবায়নের বিষয়ে দু’দেশই আগ্রহী বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, পূর্বঘোষিত পরিকল্পনা অনুযায়ী চারদেশীয় সফরের দ্বিতীয় দেশ হিসেবে ইরান ভ্রমণ করেন পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী। এরপর আজারবাইজান এবং তাজিকিস্তান সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে তার।

কুয়ালালামপুরে শুরু হয়েছে বহুল প্রতীক্ষিত আসিয়ান-জিসিসি দ্বিতীয় শীর্ষ সম্মেলন। মঙ্গলবার (২৭ মে) শুরু হওয়া এই সম্মেলনে গালফ অঞ্চলের ৬ দেশের সাথে চলছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১০ সদস্য রাষ্ট্রের বৈঠক।

সম্মেলনটি এমন সময় অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন বিশ্ব রাজনীতির নতুন মেরূকরণ, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, গাজা সংকট এবং লোহিত সাগরে নিরাপত্তা হুমকির প্রেক্ষাপটে উভয় জোটই পারস্পরিক নির্ভরতা বাড়াতে চাইছে।

বিশ্লেষকদের মতে, সম্মেলনে বাণিজ্যিক জোট গঠনের সম্ভাবনা গুরুত্ব পেতে পারে। এছাড়াও আলোচিত হচ্ছে বিনিয়োগ ও নিরাপত্তা ইস্যু। সেইসাথে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব আসতে পারে ‘চীন-পারস্য উপসাগর-দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া করিডর’ নিয়ে।

এর আগে, সকালে দিন শুরু হয় ১৬তম ইস্ট আসিয়ান গ্রোথ এরিয়া সামিট দিয়ে। ব্রুনেই, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও ফিলিপাইন নিয়ে গঠিত এই উপ-আঞ্চলিক জোটটি গত তিন দশক ধরেই সহযোগিতার নানা খাতে কাজ করছে। এবার বিশেষভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে কাস্টমস, ইমিগ্রেশন এবং কোয়ারেন্টাইন সহযোগিতা কাঠামো। যা সদস্য দেশগুলোর পণ্য ও মানুষ চলাচল আরও সহজ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।