আবু সাঈদের হত্যার ঘটনায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা এবং ১৬ জুলাই কে শহীদ আবু সাঈদ দিবস করার দাবি জানিয়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা।

সকালে রংপুরে নিজ বাড়িতে গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে কথা বলেন আবু সাইদের বাবা মকবুল হোসেন, মা মনোয়ারা বেগম ও বড় ভাই আবু হোসেন।

এসময় বাবা মকবুল হোসেন বলেন, আবু সাঈদ হত্যকাণ্ডে শুধু পুলিশ নয়, ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগসহ দলের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন ও রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রক্টরসহ যেসকল কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত ছিলো তাদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে।

এসময় মা মনোয়ারা বেগম বলেন, সমাজে যদি ধনী-গরীবের বৈষম্য নিরসন না হয় তবে, আবু সাঈদের রক্ত বৃথা যাবে। ১৬ জুলাই কে শহীদ আবু সাঈদ দিবস এবং জুলাইয়ের যেকোন এক দিনকে জুলাই শহীদ দিবস হিসেবে ঘোষণার দাবিও জানান পরিবারের সদস্যরা।

রাজুভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে শুরু হয়েছিল যে ন্যায্যতার লড়াই তার আজ ১ বছর পূর্ণ হলো। যে স্বপ্ন আর সম্ভাবনায় রচিত হয়েছিলো ৩৬ জুলাই, ১ বছরে সে পথে কতটা এগুলো বাংলাদেশ? বন্ধ হয়েছে কি বৈষম্য? মুক্তি পেয়েছে কি কথা বলার স্বাধীনতা? গন্ত্রতন্ত্রই বা কতটুকু পুঃনপ্রতিষ্ঠিত হলো? সে প্রশ্ন সবার।

১৮’র কোটা আন্দোলন ফিরে আসে ২৪’র পহেলা জুলাইতে। তপ্ত রোদে একদল শিক্ষার্থী ন্যায্যতার দাবি নিয়ে রাজু ভাস্কর্যের সামনে দাঁড়ায়। স্লোগানে বারুদ কন্ঠ— ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’।

শুরু নতুন ইতিহাস নির্মাণের লড়াই। কোটা বাতিলের পরিপত্র পুনর্বহালের জন্য সরকারকে দেয়া হয় আল্টিমেটাম। এর ফাঁকে চলে যৌক্তিক আন্দোলনের পক্ষে অনলাইন-অফলাইনে জনমত তৈরির কাজ। ৭ জুলাই পালিত হয় বাংলা ব্লকেড। ধারাবাহিকভাবে চলে বিক্ষোভ-অবরোধ। আন্দোলনে নামে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও। শুরু হয় তাদের অপবাদ দেয়ার অপচেষ্টা। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের নিয়ে কটূক্তি করে বসেন স্বয়ং শেখ হাসিনা। এতে তীব্র ক্ষোভে ফেঁটে পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

কোটার বিষয়ে শেখ হাসিনা সেদিন বলেছিলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের নাতিপুতিরা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিপুতিরা পাবে?

সেই ক্ষোভ স্ফুলিঙ্গের মতো ছড়িয়ে যায় দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। বন্দুকের গুলির সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে শহীদ হোন রংপুরের আবু সাঈদ। রাষ্ট্রযন্ত্রের সীমাহীন দমন-নিপীড়নের সাথে পরদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলে পড়ে ছাত্রলীগ। বন্ধ হয় ক্যাম্পাস। আসে হল ছাড়ার নির্দেশ। তবুও কিছু তরুণ চালিয়ে যান আন্দোলন। প্রতিবাদে যোগ দেয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

তীব্র আন্দোলনের মুখে আদালত থেকে ২১ জুলাই রায় আসে কোটা সংস্কারের। কিন্তু তখনো থামেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলি, হামলা আর গ্রেফতার। সরকারের চাপেও তাই আন্দোলন স্থগিতে রাজি হননি সমন্বয়করা। তুলে নেয়া হয় তাদের ছয়জনকে। বাকিরা ঘোষণা করেন ৯ দফা। আন্দোলনে যোগ দিতে শুরু করে রাজনৈতিক দল থেকে সাধারণ মানুষ। পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় ঢাকার সব প্রবেশপথ। অনলাইন-অফলাইনে চলতে থাকে অভিনব নানা কর্মসূচি। বাড়তে থাকে পুলিশ আর বন্দুকধারীদের গুলিতে প্রাণ হারানো বিপ্লবী বন্ধুদের সংখ্যাও। রেমিট্যান্স বন্ধ করে প্রতিবাদে শামিল হোন প্রবাসীরা।

৩ আগস্ট শুক্রবার। ডাক আসে শহীদ মিনারে। সেদিন ঢাকার সব সড়ক মেশে স্মৃতির মিনারে। লাখো মানুষের জমায়েত থেকে ঘোষণা এলো এক দফার। শেখ হাসিনাকে আর চায় না বাংলাদেশ।

এক দফার ঘোষণায় আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে স্বৈরাচারের রেজিম। বাড়তে থাকে হত্যাযজ্ঞ। পুড়িয়ে ফেলা হয় মরদেহ। এর মাঝেই প্রথমে ৬ আগস্ট, পরে ৫ তারিখেই লংমার্চের কর্মসূচি দেন জুলাই যোদ্ধারা। রচিত হয় নতুন ইতিহাস। দেশ ছেড়ে পালান শেখ হাসিনা। শৃঙ্খল ভাঙার আনন্দে মেতে ওঠে গোটা দেশ।

সেই আনন্দ আর ত্যাগের এক বছরের মাথায় স্বপ্নদেখা তরুণদের কাছে প্রশ্ন ছিল কেমন আছে বাংলাদেশ?

জবাবে জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ফ্যাসিস্ট রাজনৈতিক দলকে আমরা উৎখাত করতে পেরেছি। ফলে আমাদের একটা ধাপ অর্জিত হয়েছে। কিন্তু দেশটাকে নতুনভাবে গঠন করার কাজটা এখনও বাকি। সেই জায়গায় অপ্রাপ্তি, সেই জায়গায় হতাশা। তবে এখনও সুযোগ রয়েছে বলে মনে করেন তিনি। জুলাইয়ের ওপর দাঁড়িয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে বলেও উল্লেখ করেন এনসিপির এ নেতা।

অপরদিকে, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘যেই চাওয়ার জায়গা থেকে এতগুলো মানুষ প্রাণ দিলো, সেই জায়গায় যদি কম্প্রোমাইজড হন, তাহলে মানুষ প্রত্যাখ্যান করবে।’

কথা ছিল পরিবারতন্ত্র, স্বজনপ্রীতির ঊর্ধ্বে উঠে হবে সংস্কার। উন্নয়ন হবে সাধারণের জীবনমানের। সে প্রত্যাশা কতটা মিটেছে?

এমন প্রশ্নের জবাবে নাহিদ ইসলাম বলেন, বিপ্লবের পরে যে প্রত্যাশা থাকে, মানুষের মধ্যে সেই প্রত্যাশা ছিল। ১৭ বছরের যে ক্ষোভ, বঞ্চনা, বৈষম্য সেটার দ্রুত সমাধান চেয়েছিল সবাই। সেই প্রত্যাশা আসলে পূরণ হয়নি।

আর উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া বলেন, ‘আমরা নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের কথা বলেছিলাম, শুধু হাসিনার পতনের কথা বলিনি। আমরা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার পতনের কথা বলেছিলাম।’

যদিও আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিল যে ছাত্ররা, তারাই এখন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে। চোখে তাদের এক আকাশ সমান স্বপ্ন। গড়বে নতুন সোনার বাংলা। আর তাতে সমর্থন দিচ্ছে দেশের আপামর জনতা। আশায় বুক বেঁধে আছে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। ধারণা তাদের, পরিবর্তন আসবেই এ দেশে। তারই অপেক্ষার প্রহর গুনছেন তারা।

রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলার ৯ বছর আজ। বাংলাদেশের দেশের ইতিহাসে এটি সবচেয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে বিবেচিত হয় হলি আর্টিজান হামলাকে।

এই হামলায় নিহত হয়েছিলেন বিদেশিসহ মোট ২২ জন। নিহতদের মধ্যে ইতালি, জাপান, ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা ছিলেন। এছাড়া, হামলায় দুজন পুলিশ কর্মকর্তাও প্রাণ হারান এবং অনেকে আহত হন।

দিনটি ছিল ২০১৬ সালের ১ জুলাই (শুক্রবার)। রাত পৌনে ৯টার দিকে খবর পাওয়া যায় রাজধানীর গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কের হোলি আর্টিজান বেকারিতে ‘সন্ত্রাসীদের সঙ্গে’ পুলিশের গোলাগুলি হচ্ছে। নব্য জেএমবির পাঁচ সন্ত্রাসী বেকারিতে ঢুকে প্রথমে নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে ১৮ বিদেশি নাগরিকসহ ২২ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে।

তাদের মধ্যে ৯ জন ইতালির, সাতজন জাপানের, এক ভারতীয় এবং তিনজন বাংলাদেশি নাগরিক ছিলেন। তিনজন বাংলাদেশির মধ্যে একজনের দ্বৈত নাগরিকত্ব ছিল। ওই হামলা প্রতিরোধ করতে গিয়ে প্রাণ হারান দুই পুলিশ কর্মকর্তা।

ওই দিন পুরো রাত স্পর্শকাতর বিবেচনায় কয়েকবার প্রস্তুতি নেওয়া সত্ত্বেও অভিযান চালানো থেকে বিরত থাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরে কমান্ডো অভিযানে নিহত হয় পাঁচ সন্ত্রাসী। আইএসের পক্ষ থেকে হামলাকারীদের মধ্যে পাঁচজনকে তাদের ‘সৈনিক’ বলে দাবি করে, হামলার দায় নেয় তারা।

সেদিন যা ঘটেছিল: ২০১৬ সালের ১ জুলাই দিনটি ছিল শুক্রবার। সন্ধ্যার পর হঠাৎ করে খবর আসে গুলশানে ‘সন্ত্রাসীদের সঙ্গে’ পুলিশের গোলাগুলি হচ্ছে। রাত সাড়ে ৯টার দিকে গোলাগুলিতে আহত হন বনানী থানার ওসি মোহাম্মদ সালাউদ্দীন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। রাত ১০টার দিকে পুলিশ, র‍্যাব এবং আধা সামরিক বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের কয়েকশ সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে অবস্থান নেন। গণমাধ্যমকর্মীরাও ৭৯ নম্বর রোডের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থান নেন।

রাত সোয়া ১১টার দিকে হাসপাতালে মারা যান বনানী থানার ওসি মোহাম্মদ সালাউদ্দীন। রাত ৪টা পর্যন্ত অস্ত্রধারীদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ স্থাপন করতে পারেননি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

রাতভর হলি আর্টিজান বেকারি সংলগ্ন এলাকা ঘিরে রাখার পর যৌথ সেনা, নৌ, পুলিশ, র‍্যাব এবং বিজিবির সমন্বয়ে যৌথ কমান্ডো দল গুলশানে অভিযানের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেয়। সকাল পৌনে ৮টায় কমান্ডো বাহিনী অভিযান শুরু করে। অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত দলের সদস্যরা রেস্টুরেন্টের ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়।

সকাল সোয়া ৮টায় বেকারি থেকে প্রথম দফায় নারী ও শিশুসহ ছয়জনকে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়। পাশের একটি ভবন থেকে একজন বিদেশি নাগরিক তার মোবাইল ফোনে সেটি ধারণ করেন। ৮টা ৫৫ মিনিটে ভবনের নিয়ন্ত্রণ নেয় অভিযানকারীরা। গোয়েন্দা দল ভবনের ভেতর বিস্ফোরকের জন্য তল্লাশি শুরু করে। কিছুক্ষণ পরই আলামত সংগ্রহের কাজ শুরু করে গোয়েন্দারা।

৯টা ১৫ মিনিটে অভিযান শেষ হয়। কমান্ডো অভিযানের মধ্য দিয়ে ঢাকার গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে প্রায় ১২ ঘণ্টার রক্তাক্ত জিম্মি সংকটের অবসান হয়।

‘থান্ডারবোল্ট’ নামে সেনাবাহিনীর কমান্ডোরা যে অভিযান চালান সেখানে জঙ্গি হামলায় সরাসরি অংশ নেওয়া পাঁচ তরুণের সবাই মারা যান। তারা হলেন মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ ওরফে মামুন, নিবরাজ ইসলাম, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল।

সকাল ১০টায় চার বিদেশিসহ ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধারের খবর জানানো হয়। রেস্টুরেন্টের ভেতরে অজ্ঞাত পাঁচজনের লাশ পাওয়ার কথা পুলিশ জানায়। ১১টা ৫০ মিনিটে অভিযানে সন্ত্রাসীদের ছয়জন নিহত এবং একজন ধরা পড়েছে বলে নিশ্চিত করা হয়।

শহীদের রক্তের উপর দিয়ে ক্ষমতায় এসেও সরকার জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র দিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মানবাধিকার কর্মী ও আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।

আজ মঙ্গলবার (১ জুলাই) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এবি পার্টির জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ৩৬ দিন উদ্‌যাপনের উদ্বোধনী ও আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।

মাহমুদুর রহমান বলেন, আবার যাতে কেউ শেখ হাসিনার মত ফ্যাসিবাদী হয়ে উঠতে না পারে তার জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে। ১০ বছরে বেশি প্রধানমন্ত্রী নয়, এ প্রস্তাবে সকল দলের ঐকমত্যের মধ্যে দিয়ে তার প্রাথমিক ধাপ অর্জিত হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

এ সময়, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, দেশকে পরাধীনতা ও আধিপত্যবাদ থেকে মুক্ত করতে হবে। সেইসাথে, আবারও ফ্যাসিবাদ রুখতে প্রয়োজনে জীবন দেয়ার অঙ্গীকার করেন তিনি।

এর আগে, এবি পার্টির ৩৬ দিনের কর্মসূচির উদ্বোধন করে শহীদ নাজমুল কাজির স্ত্রী মারিয়া সুলতানা রাখি।

২০২৫-২৬ অর্থবছরের মধ্যে নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা বিবেচনায় আগেই নির্বাচনী বাজেট করে রেখেছে অন্তর্বর্তী সরকার। নির্বাচনী বাজেট নিয়ে সরকার কোনো কার্পণ্য করবে না—বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

মঙ্গলবার (১ জুলাই) দুপুরে সচিবালয়ে ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া ইউরিয়া সার কেনার অনুমোদন দেয়া হয়েছে ক্রয় সংক্রান্ত কমিটিতে।

এদিকে বৈঠক শেষে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এনবিআরের কর্মকর্তাদের আন্দোলনের ফলে চট্টগ্রাম বন্দর তিনদিন বন্ধ থাকলেও আমদানি-রফতানির ওপর খুব বেশি প্রভাব পড়েনি। তবে আর্থিকভাবে কতটা ক্ষতি হয়েছে, সে হিসাব এখনও হয়নি।

তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালনার দায়িত্ব আগামী ছয় মাসের জন্য নতুন একটি প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হবে। কারা পাবেন, তা নিয়ে বুধবারের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে, তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। এমনকি সংবিধান বাতিল করে গণপরিষদ নির্বাচন দিতে হবে।

আজ মঙ্গলবার (১ জুলাই) বেলা ১১টায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে পুলিশের গুলিতে নিহত আবু সাঈদের কবর জিয়ারত শেষে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

আখতার হোসেন বলেন, আবু সাঈদ আমাদের দ্রোহের প্রতীক। তার কবরের পাশ থেকে আমরা নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখি। আমরা আবু সাঈদের কবর ছুঁয়ে শপথ করছি— যতক্ষণ না নতুন বন্দোবস্তের ভিত্তিতে, মৌলিক সংস্কারের ভিত্তিতে বৈষম্যবিরোধী বাংলাদেশ গঠিত হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির এই সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।

তিনি আরও বলেন, বিচার, সংস্কার ও নতুন সংবিধানের দাবিতে দেশ গড়ার জুলাই পদযাত্রার সূচনা আমরা করলাম শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে। হাজার হাজার মানুষের আত্মত্যাগ ও রক্তদানের মধ্য দিয়ে আমরা ফ্যাসিবাদের কবর রচনা করেছি। এজন্য অবশ্যই পুরনো কাঠামো ভেঙে নতুন বন্দোবস্ত নির্মাণ করতে হবে, মৌলিক সংস্কার আনতে হবে।

আখতার বলেন, জুলাই বিপ্লবে যারা হামলা চালিয়েছে, মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে—তাদের বিচার করতে হবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশের পুরনো ‘মুজিববাদী’ সংবিধান বাতিল করে গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে হবে। সব মিলিয়ে একটি নতুন বাংলাদেশ পুনর্গঠন করতে হবে।

এর আগে সকাল সাড়ে দশটায় দরটির আহ্বায়াক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখপাত্র নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, দক্ষিণাঞ্চল মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, উত্তরাঞ্চল মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্থা শারমিন, যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা, যুগ্ম-মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) মাহমুদা মিতু সহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেন।

পরে নেতৃবৃন্দ শহীদ আবু সাঈদের বাড়িতে গিয়ে তার বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তারা আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার পাশাপাশি পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।

কবর জিয়ারতের মাধ্যমেই শুরু হয় ‘বেশ করতে, দেশ গড়তে’ শীর্ষক জুলাই পদযাত্রা। গাইবান্ধার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে পলাশবাড়ী, সাদুল্লাপুর, সুন্দরগঞ্জ হয়ে পদযাত্রা রংপুরে পৌঁছায়। নগরীতে পদযাত্রা শেষে দিনের কর্মসূচি শেষ হয়। পরে তারা কাউনিয়ায় পদযাত্রায় অংশ নেবেন।

আগামী জাতীয় ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘ভোটকেন্দ্র স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা নীতিমালা-২০২৫’ জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে বাদ দেয়া হয়েছে ভোটকেন্দ্র স্থাপনে জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও), ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সমন্বয়ে গঠিত কমিটি এবং ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পদ্ধতি। আজ সোমবার (৩০ জুন) এই নীতিমালা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে।

নীতিমালা থেকে জানা যায়, মহানগর, জেলা, উপজেলা ও থানা পর্যায়ের প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে ভোটকেন্দ্র স্থাপন কমিটি রাখা হয়নি। ভোটকেন্দ্র স্থাপনে নির্বাচন কর্মকর্তাদের একক ক্ষমতা রাখা হয়েছে। পাশাপাশি বাদ দেয়া হয়েছে ইভিএমে ভোট দেওয়ার জন্য কক্ষ নির্ধারণের বিষয়টিও।

২০২৩ সালের ভোটকেন্দ্র নীতিমালায় ভোটকেন্দ্র নির্ধারণের ক্ষেত্রে ডিসি ও এসপিদের সমন্বয়ে একটি জেলা কমিটি গঠন করেছিল নির্বাচন কমিশন। এ কমিটির মাধ্যমেই ভোটকেন্দ্রের স্থান নির্ধারণ ও পুনর্বিন্যাসের সিদ্ধান্ত নেয়া হতো। তবে এই কমিটিগুলোর নিরপেক্ষতা ও রাজনৈতিক প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় নতুন নীতিমালা অনুমোদন দিয়েছে ইসি।

নীতিমালা অনুযায়ী, বরাবরের মতো গড়ে ৩ হাজার ভোটারের জন্য একটি ভোটকেন্দ্র এবং গড়ে ৫০০ জন পুরুষ ও ৪০০ জন নারী ভোটারের জন্য একটি করে ভোটকক্ষ নির্ধারণ করা হয়েছে।

দেশের ৩৭১টি হাওরের সীমানা নির্ধারণ হওয়া উচিত। যেসব হাওর মাছের আধার, সেখানে সার ও কিটনাশক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। এমনটা বলেছেন পানি সম্পদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

সোমবার (৩০ জুন) বিকেলে রাজধানীর পানি ভবনে হাওর মহাপরিকল্পনা মূল্যায়ন ও হালনাগাদ নিয়ে জাতীয় কর্মশালায় তিনি এ কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন ব্যবসার কারণে মাছ উৎপাদন ও মৎসজীবীদের ওপর প্রভাব পড়ছে। হাওরে পর্যটন ব্যবসা নিয়েও আলোচনা করতে হবে। পরিবেশ দূষণ হয় এমন কাজ থেকে সকলকে বিরত থাকতে হবে।

নদীর মত হাওরও জীবন্ত সত্তা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এক মাসের মধ্যে মাস্টারপ্ল্যান ওয়েবসাইটে দেয়া হবে। মাস্টারপ্ল্যানের শর্ট ভার্সন করে জনগণের মাঝে বণ্টন করতে হবে। হাওর এলাকায় বনায়নে আলাদা বাজেট দেয়া হবে বলেও জানান সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র দিতে না পারলে জুলাই উদযাপনে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো ধরনের উদ্যোগ নেয়ার এখতিয়ার নেই।

সোমবার (৩০ জুন) বিকেল ৫টা ৩ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে তিনি এ কথা বলেছেন। তার এই পোস্টে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ ও ‘জুলাই সনদ’ দুইভাগে লেখাটি লিখেছেন।

‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ শিরোনামে তিনি লিখেছেন, ‘জুলাই ঘোষণাপত্র হচ্ছে জুলাই ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, শহীদ, আহত ও নেতৃত্বদের অবদান ও রাজনৈতিক নিরাপত্তা ও সুরক্ষা এবং জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষার সংজ্ঞায়ন নিশ্চিতে একটি জাতীয় দলিল যা পরবর্তীতে আইনি ও সাংবিধানিক ভিত্তি পাবে।

৩১ ডিসেম্বর ছাত্রনেতৃত্ব জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র দিতে চেয়েছিল। কিন্তু সরকার সকল রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা করে সরকারিভাবে ঘোষণাপত্র দিতে চেয়েছিল। ছাত্রনেতৃত্ব তাই তাদের উদ্যোগ থেকে সরে এসেছিল।
সরকার বিভিন্ন দল/পক্ষ থেকে খসড়া ঘোষণাপত্র চেয়েছিল। সেই সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে একটা খসড়া ঘোষণাপত্র দেওয়া হয়েছিল। সবগুলা ডকুমেন্ট মিলিয়ে একটা কমন দলিল তৈরি করার কথা ছিল যা সবপক্ষ একসাথে উদযাপনের মাধ্যমে ঘোষণা করবে।

কিন্তু সরকার দুই দুইবার সময় দিয়েও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি। কেনো করেনি, কোথায় বাধা পেলো তাও স্পষ্ট করে নি।

আমরা চাই রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে এ ঘোষণাপত্র জারি করা হউক, যা পরবর্তীতে সংবিধানে যুক্ত করার কমিটমেন্ট থাকবে। কিন্তু সরকার যদি কোনো উদ্যোগই না নেয় আমরা বসে থাকবো না। আমাদের বক্তব্য, আমাদের ইশতেহার অবশ্যই আমরা প্রকাশ করবো। অন্য সকল পক্ষকেও বলবো আপনাদের ইশতেহার তৈরি করুন। সকলে মিলে আমরা দলিল তৈরি করতে পারলে সরকার সেটা গ্রহণ করতে বাধ্য থাকবে।

জুলাই ঘোষণাপত্র শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকেই পাঠ করা হবে।’

‘জুলাই সনদ’ প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম লিখেছেন, ‘জুলাই সনদে রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কারের রুপরেখা থাকবে। সংবিধানের কোন কোন যায়গায় পরিবর্তন হবে সে বিষয়ে রাজনৈতিক ঐক্যমতের দলিল হবে জুলাই সনদ যেখানে সকল দল স্বাক্ষর করবে। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি এখনো ঠিক হয় নাই গণভোট, গণপরিষদ অথবা সংসদে সংশোধনীর মাধ্যমে এই সনদ কার্যকর হবে।

পরবর্তী নির্বাচিত সরকার জুলাই সনদ অনুযায়ী সংস্কারের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে বাধ্য থাকবে। জুলাই-অগাস্টে জুলাইয়ে ঘোষণাপত্র ও সনদ দুইটাই দেয়া সম্ভব।’

সবশেষ এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, কোনো একটি পক্ষ যদি দলীয় স্বার্থে ঐক্যমত প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে তাহলে সরকারের উচিত ভয় না করে অন্য সকল পক্ষ ও সাধারণ জনগণকে সাথে নিয়ে এ ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করা। জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র দিতে না পারলে সরকারের এখতিয়ার থাকবে না জুলাই উদযাপনে কোনো ধরনের উদ্যোগ নেয়ার।

তিনি আরও বলেছেন, আমরা দৃঢ়ভাবে চাই ৫ আগস্ট তথা ৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদ রচিত হোক। সকল পক্ষ সকল ধরনের ছাড় দিয়ে সরকারকে সহযোগিতা করুক।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।

আজ সোমবার (৩০ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রধান উপদেষ্টার মধ্যে এই ফোনালাপ অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ১৫ মিনিটব্যাপী এ আলোচনাটি আন্তরিক, সৌহার্দ্যপূর্ণ ও গঠনমূলক ছিল বলেও জানান প্রেস সচিব।

প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস ও মার্কো রুবিওর মধ্যে আলাপ হয় দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক আরও আন্তরিক ও গঠনমূলক করতে। বন্ধুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের প্রতিফলন এই ফোনালাপে ঘটবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া বলেছেন, ‘নিরাপত্তার স্বার্থে আমার লাইসেন্স করা বৈধ অস্ত্র আছে। গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্বের ওপর যেভাবে কয়েক দফা হত্যাচেষ্টা চালানো হয়েছে, তাতে এটি রাখা স্বাভাবিক। যখন সরকারি প্রোটোকল বা সিকিউরিটি থাকে না, তখন নিজের এবং পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতের উদ্দেশ্যে লাইসেন্সকৃত অস্ত্র রাখা হয়।’

আজ রোববার (২৯ জুন) সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে এসব কথা বলেন তিনি।

আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘মরক্কোর মারাকেশে অনুষ্ঠিতব্য ‘ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল ইন্টারন্যাশনাল প্রোগ্রামে’ অংশগ্রহণের জন্য আজ ভোর ৬টা ৫০ মিনিটে ফ্লাইট ছিল। ভোরে প্যাকিং করার সময় অস্ত্রসহ একটি ম্যাগাজিন রেখে এলেও, ভুলবশত আরেকটি ম্যাগাজিন ব্যাগেই রয়ে যায়। স্ক্যানিংয়ে ধরা পড়ার পর সেটি আমি আমার প্রোটোকল অফিসারের কাছে হস্তান্তর করি। বিষয়টি সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত ছিল।’

আসিফ মাহমুদের ফেসবুক পোস্ট

তিনি আরও বলেন, ‘শুধু ম্যাগাজিন দিয়ে আমি কী করব ভাই? যদি আমার কোনো উদ্দেশ্য থাকত, তবে নিশ্চয়ই অস্ত্র রেখে আসতাম না। এখানে অবৈধ কিছু না থাকলেও, অনেকের জন্যই এটা আলোচনার খোরাক বটে।’

আসিফ মাহমুদ আরও বলেন, ‘তবে চাপ দিয়ে সংবাদ সরানোর অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। এই ঘটনার পর আমি টিমসহ টানা ১০ ঘণ্টা ফ্লাইটে ছিলাম। ট্রানজিটে নেমে দীর্ঘক্ষণ পর অনলাইনে এসে দেখি যে এত কিছু ঘটে গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নাগরিক হিসেবে আপনারও যদি নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকে, তবে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে আপনিও অস্ত্রের লাইসেন্স করতে পারেন।’

আবু সাঈদের মৃত্যুবার্ষিকীতে জুলাই সনদ স্বাক্ষরের আশা ছিল। এখন বিষয়টি রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর নির্ভর করছে। তবে কোনও কারণে তা না হলেও আগামী মাসের মধ্যেই জুলাই সনদ স্বাক্ষর করা হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ।

রোববার (২৯ জুন) দ্বিতীয় পর্যায়ের সপ্তম দিনের বৈঠক শুরুর আগে এ কথা বলেন তিনি।

আলী রীয়াজ বলেন, পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষার প্রেক্ষিতে ঐকমত্য কমিশন আগের জায়গা থেকে সরে এসেছে। রাজনৈতিক দলগুলোর অনেক প্রস্তাবনা গ্রহণ করা হয়েছে৷ এখন দলগুলোকেও কিছুটা ছাড় দিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিপক্ষ নয়। আমরা একটি দায়িত্ব পালন করতে এসেছি। রাজনৈতিক দলগুলোই আগামীতে শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তন করবে। জনআকাঙ্ক্ষার বাইরে গিয়ে যাতে কেউ সংবিধান সংস্কার করতে না পারে তা সাংবিধানিকভাবে নিশ্চিত করা দরকার। পাশাপাশি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাধীনতা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।

জুলাই অভ্যুত্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের প্রত্যেকেরই দল রয়েছে এবং থাকবে। কিন্তু অভ্যুত্থানের সময় কোনও দলের পতাকা উত্তোলিত হয়নি। সেদিন শুধু বাংলাদেশের পতাকাই উড়ানো হয়েছিল। দেশের স্বার্থে আমরা সবাই এক হয়েছিলাম। কে নেতৃত্ব দিচ্ছে বা কে পাশে আছে সে চিন্তা আমরা করিনি। ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে মুক্ত হওয়া ও ফ্যাসিবাদী শাসন তৈরির কাঠামোকে পরিবর্তন করা আমাদের লক্ষ্য ছিল।

আলী রীয়াজ আরও বলেন, গত সাতদিন ধরে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা চলছে। বিভিন্ন বিষয়ে অগ্রগতি হলেও আশাব্যঞ্জক অগ্রগতির ক্ষেত্রে খানিকটা পিছিয়ে রয়েছি। জুলাই অভ্যুত্থানের অজ্ঞীকারের জায়গায় আমরা কতটুকু থাকতে পেরেছি? শুধু ব্যক্তি বা দলের অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ হবে নাকি রাষ্ট্র ও দেশের স্বার্থকে আমরা আরেকটু বিবেচনা করব, তা ভাবতে হবে।