জঙ্গিবাদে জড়িত থাকার অভিযোগে মালয়েশিয়ায় গ্রেফতার হওয়া বাংলাদেশিরা সিরিয়া ও বাংলাদেশে ‘ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সেলগুলোকে অর্থ পাঠাতো’ বলে তথ্য দিয়েছেন দেশটির পুলিশ প্রধান (আইজিপি) মোহাম্মদ খালিদ ইসমাইল।

শুক্রবার (৪ জুলাই) বুকিত আমানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য দেন। খবর দ্য স্টার, মালয়েশিয়ার।

মোহাম্মদ খালিদ ইসমাইল বলেছেন, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে পরিচালিত ধারাবাহিক অভিযানে ওই ৩৬ বাংলাদেশিকে আটক করা হয়। তারা কারখানা, নির্মাণ ও সেবা খাতে কর্মরত ছিলেন।

গোয়েন্দা তথ্যের বরাতে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশিদের ওই চক্রটি অন্য বাংলাদেশি শ্রমিকদের মধ্যে থেকে সদস্য বাড়াচ্ছিলেন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মেসেজিং অ্যাপের মাধ্যমে ‘উগ্রবাদী মতাদর্শ’ ছড়াচ্ছিলেন।

চক্রটি আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার সার্ভিস ও ই-ওয়ালেট ব্যবহার করে সিরিয়া ও বাংলাদেশে ‘আইএসের জন্য’ অর্থ পাঠাতেন বলে জানান মালয়েশিয়া পুলিশের মহাপরিদর্শক।

মালয়েশিয়া পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের কাউন্টার টেরোরিজম ডিভিশন অর্থ সংগ্রহের প্রমাণ পেয়েছে বলেও জানানো হয়।

গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে পাঁচজনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে জাড়িত থাকার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। ১৫ জনকে দেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। আর ১৬ জন এখনও পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন খালিদ ইসমাইল।

তিনি জানিয়েছেন, যাদের সংশ্লিষ্টতা কম তাদেরকে দেশে ফেরত পাঠানো হবে। আর যাদের সম্পৃক্ততা বেশি, তাদের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ার প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

হলিউড অভিনেতা মাইকেল ম্যাডসেন মারা গেছেন। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের মালিবুর নিজ বাসায় হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়। বার্তা সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

কোয়েন্টিন টারান্টিনোর সিনেমার মধ্য দিয়ে পরিচিতি লাভ করেন মাইকেল ম্যাডসেন। মৃত্যুর বিষয়ে তার ম্যানেজার সুসান ফেরিস ও রন স্মিথ এবং জনসংযোগ কর্মকর্তা লিজ রড্রিগেজ এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, মাইকেল ম্যাডসেন ছিলেন হলিউডের অন্যতম আইকনিক অভিনেতা। তার শূন্যতা বহু মানুষ অনুভব করবে।

নব্বইয়ের দশকে মুক্তি পাওয়া ক্রাইম থ্রিলার সিনেমা ‘‘রেজারভোয়ার ডগ্‌স’’-এর ‘‘মিস্টার ব্লন্ড’’ ও ‘‘কিল বিল’’-এ ‘‘বাড’’ চরিত্রের জন্যই সিনেমাপ্রেমীদের মনে জায়গা করে নেন তিনি। দুই সিনেমারই নির্মাতা ছিলেন কোয়েন্টিন টারান্টিনো।

এছাড়াও এই নির্মাতার ‘‘দ্য হেটফুল এইট’ ’ও ‘‘ওয়ান্স আপন আ টাইম…ইন হলিউড’’সহ অন্যান্য সিনেমাতেও দেখা গেছে এই হলিউড তারকাকে। চার দশকের ক্যারিয়ারে ৩ শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। ২০০২ সালে মুক্তি পাওয়া ‘‘জেমস বন্ড’’ সিরিজের ‘‘ডাই অ্যানাদার ডে’’তেও অভিনয় করেন ম্যাডসেন।

এবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর রাগ করে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইলন মাস্ক। প্রেসিডেন্টের কর ও ব্যয় সংকোচন বিল নিয়ে ক্ষেপেছেন এই শীর্ষ ধনকুবের। যেসব আইনপ্রণেতা বিলের পক্ষে ভোট দেবেন, তাদেরও দেখে নেয়ার হুমকি দিয়েছেন তিনি। তবে পাল্টা জবাবে ইলন মাস্কের সব প্রতিষ্ঠানের ভর্তুকি পুনর্বিবেচনার নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাম্প। তার দাবি, ভর্তুকি বন্ধ হলে মাস্ককে ব্যবসা গুটিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরে যেতে হবে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে বেশ সরব ছিলেন ইলন মাস্ক। আলোচিত দুই ব্যক্তির রসায়ন সে সময় বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করার পেছনে কোটি কোটি ডলার খরচ করেছেন মাস্ক—এমন গুঞ্জনও রয়েছে।

ট্রাম্পের জয়ের পর রীতিমতো তার ছায়াসঙ্গী হয়ে ওঠেন টেসলা ও স্পেসএক্স প্রধান। দক্ষতা বিষয়ক বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পাশাপাশি, মন্ত্রিসভা গঠন থেকে শুরু করে প্রেসিডেন্টের প্রতিটি সিদ্ধান্তে তার প্রভাব নজর এড়ায়নি। বিভিন্ন নীতিতে পরস্পরকে অন্ধ সমর্থন দিয়েছেন, সমালোচনার মুখে একে অপরের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন।

ট্রাম্প ও মাস্কের এই ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বে ফাটল ধরতেও সময় লাগেনি। মার্কিন প্রশাসনে ১৩০ দিনের দায়িত্ব পালন শেষে ট্রাম্পকে যেনো নিজের শত্রু বানিয়ে নিয়েছেন মাস্ক। প্রেসিডেন্টের কর ও ব্যয় সংকোচন সংক্রান্ত ‘বিগ বিউটিফুল বিল’-কে কেন্দ্র করে ক্রমেই উত্তেজনা বাড়ছে দুই বন্ধুর মধ্যে।

নিজের সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ দেওয়া একের পর এক পোস্টে আলোচিত বাজেট বিলটির তীব্র সমালোচনা করেন টেসলার সিইও। যেসব আইনপ্রণেতা বিলটির পক্ষে অবস্থান নেবেন, তাদের দেখে নেওয়ার হুমকিও দেন তিনি।
পাশাপাশি, যুক্তরাষ্ট্রে একদলীয় শাসন চলছে বলে অভিযোগ করে ‘আমেরিকান পার্টি’ নামে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

চুপ থাকেননি ট্রাম্পও। ক্ষোভ ঝেড়েছেন ইলন মাস্কের ওপর। তার অভিযোগ, মাস্কের প্রতিষ্ঠানগুলো যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ভর্তুকি পেয়েছে। আর এই ভর্তুকি না পেলে তাকে ব্যবসা গুটিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরে যেতে হবে বলেও মন্তব্য করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। শীর্ষ ধনকুবেরকে দেয়া ভর্তুকি পুনর্বিবেচনায় দক্ষতা বিষয়ক বিভাগকে নির্দেশও দিয়েছেন ট্রাম্প।

ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা, বিশেষ করে তেল রফতানির ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো শিথিল করতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র বলে জানিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে শর্ত হচ্ছে, ইরানকে অবশ্যই শত্রুতাপূর্ণ আচরণ বন্ধ করে ভালো ব্যবহার করে শান্তির পথে ফিরে আসতে হবে।

স্থানীয় সময় রোববার (২৯ জুন) ফক্স নিউজে প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা আমাদের অনেক টাকা খরচ করছে, কিন্তু আমি ইরানের মতো দেশগুলোর জন্য এগুলো শিথিল করতে প্রস্তুত, যদি তারা ভালো আচরণ করে। তারা তেল বিক্রি করতে পারবে এবং অন্যান্য কাজও করতে পারবে যা তারা করতে চায়’।

গত মঙ্গলবার (২৪ জুন) ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প ঘোষণা দেন যে চীন এখন থেকে ইরান থেকে তেল কিনতে পারবে। তবে এই পোস্টের ঠিক একদিন পর তিনি বলেন, ইরানের তেল রাজস্ব বন্ধ করার তার কোনও উদ্দেশ্য নেই, কারণ ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধের পর দেশটিকে পুনর্গঠনের জন্য এই অর্থ প্রয়োজন।

তবে শুক্রবার (২৭ জুন) ট্রাম্প জানান, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলি খামেনির বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ইরানের পুনর্গঠনে সহায়তার লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা শিথিলের কাজ তিনি সাময়িকভাবে স্থগিত রেখেছেন।

রোববারের (২৯ জুন) সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প এই অভিযোগ নাকচ করে দেন যে তার প্রশাসন চীনকে নিষিদ্ধ ইরানি তেল কিনতে অনুমতি দিয়েছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, নিষেধাজ্ঞা এখনও বলবৎ আছে। তবে তিনি যোগ করেন, ‘যদি তারা কাজ করে, শান্তিপূর্ণ থাকে এবং প্রমাণ করে যে আর ক্ষতি করবে না, তাহলে আমি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেব’।

ট্রাম্প ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের আব্রাহাম চুক্তির প্রসঙ্গও তোলেন। তিনি বলেন, ইরানের হুমকি আগে এই অঞ্চলে শান্তির প্রধান বাধা ছিল। ইরানই ছিল মূল সমস্যা।

ট্রাম্প এও বলেন, ‘আমি মনে করেছিলাম একটা সময় আসবে যখন ইরানও আব্রাহাম চুক্তিতে যোগ দেবে। সত্যি বলতে, সেটা তাদের জন্য বর্তমান অবস্থার চেয়ে ভালো হতো’।

তিনি আরও বলেন, ইরানের সাম্প্রতিক প্রতিকূলতার পর নতুন কিছু দেশ এই চুক্তিতে যোগ দিতে আগ্রহ দেখিয়েছে, তবে তিনি সুনির্দিষ্ট কোনও দেশের নাম উল্লেখ করেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে তুরস্কের পশ্চিমাঞ্চলীয় ইজমির প্রদেশ। স্থানীয় সময় রোববার (২৯ জুন) সমুদ্র তীরবর্তী প্রদেশটির বনাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে আগুন। বাতাসের তীব্রতায় মুহূর্তেই আশেপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে আগুন।

ঘণ্টায় ১শ’ কিলোমিটার বাতাসের বেগ থাকায়, আগুনের লেলিহান শিখা ছড়ায় তুরস্কের জনপ্রিয় পর্যটন নগরী ম্যান্ডেরেস-এ। ফলে সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয় ইজমির আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর।

জঙ্গলের কাছাকাছি ৬টি এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়েছে প্রশাসন। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করছে ১ হাজারের বেশি ফায়ার সার্ভিস কর্মী। এছাড়া ১১টি বিমান ও ২৭টি হেলিকপটার থেকে ছিটানো হচ্ছে রাসায়নিক। দাবানলের প্রভাবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।

সূত্র: দ্য মিরর।

ইরানের রাজধানী তেহরানের এভিন কারাগারে ইসরায়েলের হামলায় ৭১ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির বিচার বিভাগ।

ইরানের সাথে বিমানযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে ইসরায়েল গত ২৩ জুন এভিন কারাগারে হামলা চালায়। এটি তেহরানের সবচেয়ে কুখ্যাত রাজনৈতিক বন্দি কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।

রোববার (২৯ জুন) দেশটির বিচার বিভাগ নিশ্চিত করেছে এই তথ্য। এক প্রতিবেদনে এমনটা জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

নিহতের তালিকায় রয়েছে কারা কর্মকর্তা, সেনা সদস্য, কয়েদি ও কয়েদিদের স্বজনরা। পাশাপাশি, প্রাণহানির এই তালিকায় কারাগারটির আশপাশের বাসিন্দারাও রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে তেহরান।

সংঘাত চলাকালীন ২৩ জুন এভিন কারাগারে হামলা চালায় আইডিএফ। এতে কারাগারের বিভিন্ন ভবন ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়। তাদের এই হামলা তীব্র সমালোচনার জন্ম দেয়। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তোলে ইরান।

এভিন কারাগারে একাধিক বিদেশি নাগরিক আটক রয়েছে। এর মধ্যে দুজন ফরাসি নাগরিক সেসিল কোলার ও জ্যাক প্যারিস আছেন, যারা তিন বছর ধরে আটক সেখানে।

ভারতের ওডিশা রাজ্যের পুরীতে ঐতিহাসিক রথযাত্রায় পদদলিত হয়ে দুই নারীসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। 

রোববার (২৯ জুন) স্থানীয় সময় ভোর ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে ভারতের ওডিশা রাজ্যের পুরিতে জগন্নাথ মন্দির থেকে তিন কিলোমিটার দূরে গুন্ডিচা মন্দিরের কাছে ঘটনাটি ঘটে। নিহত ব্যক্তিরা হলেন বোলাগড়ের বাসন্তী সাহু, প্রেমাকান্ত মোহান্তি ও বালিপাটনার প্রভাতী দাস।

ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের দাবি, বহু ভক্ত রথের দড়ি ধরার জন্য প্রতিযোগিতা শুরু করলে হুড়োহুড়ি শুরু হয় আর ভিড়ের চাপে অনেকে পিষ্ট হন।

সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস।

বহু জল্পনা-কল্পনার পর অবশেষে বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন বিশ্বের ৩য় ধনী ব্যক্তি জেফ বেজোস ও তার দীর্ঘ ৪ বছরের প্রেমিকা সাংবাদিক লরেন স্যানচেজ।

শুক্রবার (২৭ জুন) ইতালির ভেনিসে আয়োজিত হয় রাজকীয় এ বিয়ের অনুষ্ঠান। বিয়ের শপথ ও আংটি বদলের মাধ্যমে তারা সম্পন্ন করেন বিয়ের মূল আনুষ্ঠানিকতা। প্রকাশিত হয়েছে গাঁটছড়া বাধার পর এ জুটির প্রথম ছবিও, যা রীতিমতো ভাইরাল সোশাল মিডিয়া জুড়ে। স্যানচেজ নিজেই সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেন ছবিটি।

গতকাল সন্ধ্যায় ভেনিসের সান জর্জিও দ্বীপে বিয়ের মূল আয়োজন শেষ হয়। সেখানে এই দম্পতি আংটি বদল করেন। জাঁকজমক এই বিবাহ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্র, রাজনীতি, অর্থনীতি এবং বিনোদন জগতের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ। বিকেলে কার্ডাশিয়ান-জেনার পরিবার, বিল গেটস, কার্লি ক্লস, অপরা উইনফ্রেসহ জনপ্রিয় তারকাদের ওয়াটার ট্যাক্সিতে করে অনুষ্ঠানস্থলে যেতে দেখা যায়।

এছাড়া হলিউড অভিনেতা লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও, গায়ক মিক জ্যাগার, ব্রিটিশ অভিনেতা অরল্যান্ডো ব্লুম, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেয়ে ইভাঙ্কা ট্রাম্পসহ আরও অনেক জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তিন দিনের আয়োজনের শেষ দিন শনিবার আয়োজিত হবে বিয়ের প্রধান পর্ব।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে প্রথম বেজোস ও সানচেজের সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন ওঠে। এরপর থেকেই আলোচনায় ছিল এই জুটি। অবশেষে গুঞ্জনের অবসান ঘটিয়ে ২০২৩ সালে বাগদান সম্পন্নের পর শুক্রবার বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন তারা। তবে অনেকেরই ধারণা, এরই মধ্যে মার্কিন রীতি ও আইন মেনে বিয়ে সেরে ফেলেছেন বেজোস-সানচেজ জুটি। ইতালিতে বিয়ের আয়োজন ছিল আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে মার্কিন হামলা তেহরানের কর্মসূচিকে মাত্র কয়েক মাসের জন্য পিছিয়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির প্রতিরক্ষা সদর দফতর পেন্টাগনসহ অন্যান্য মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।

বুধবার (২৫ জুন) এক প্রতিবেদনে তিনটি সূত্রের বরাতে এমনটাই জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

এ সংক্রান্ত প্রাথমিক প্রতিবেদনটি তৈরি করে ‘প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা’, যা পেন্টাগনের প্রধান গোয়েন্দা শাখা এবং ১৮টি মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার মধ্যে একটি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে গোয়েন্দা সংস্থাটির একাধিক কর্মকর্তা জানান, ইরান কয়েক মাসের মধ্যে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি পুনরায় শুরু করতে পারে। তারা আরও অনুমান করছেন যে এটি আগামী এক থেকে দুই মাসের মধ্যেই শুরু হতে পারে।

তবে সংস্থাটির এই প্রতিবেদন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং প্রতিরক্ষাসচিব পিট হেগসেথসহ উচ্চপদস্থ মার্কিন কর্মকর্তাদের বক্তব্যের সাথে সাংঘর্ষিক।

কারণ এর আগে ট্রাম্প দাবি করেন, মার্কিন বোমারু বিমান ‘বি-২’ দিয়ে বাঙ্কার-বিধ্বংসী বোমা ব্যবহার করে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণ ধ্বংস করা হয়েছে।

যদিও গতকাল মঙ্গলবার (২৪ জুন) ট্রাম্প প্রশাসন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে জানিয়েছে, তাদের হামলা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির কিছু ‘ক্ষয়ক্ষতি’ করেছে, যা মূলত ট্রাম্পের পূর্বের দাবির সম্পূর্ণ বিপরীত, যেখানে ট্রাম্প বলেছিল স্থাপনাগুলো ‘সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন’ করা হয়েছে।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লিভিটের সিএনএন-কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, সবাই জানে চৌদ্দটি ৩০ হাজার পাউন্ড বোমা তাদের লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁতভাবে ফেললে কী ঘটতে পারে—’সম্পূর্ণ ধ্বংস’।

অপরদিকে, বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি মূল্যায়নটি স্যাটেলাইট চিত্রের ওপর ভিত্তি করে করা হয়, তাহলে ফোর্ডো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থাপনার ক্ষতির পরিমাণ যথাযথভাবে প্রকাশ করা সম্ভব না।

এর আগে, ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার পর ট্রাম্প বলেছিলেন—দেশতিকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি থেকে বিরত রাখার জন্য এই হামলা প্রয়োজনীয় ছিল।

তবে ইরান বলছে ভিন্ন কথা। তাদের মতে, ইরান কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির দিকে ঝুঁকেনি। তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি উদ্দেশ্যে ছিল শান্তিপূর্ণ, কোন ধরনের মরণাস্ত্র তৈরির জন্য নয়।

ইরানের সর্বশেষ রাজতন্ত্রের উত্তরাধিকারী রেজা পাহলভি স্থানীয় সময় সোমবার (২৩ জুন) পশ্চিমা দেশগুলোকে আহ্বান জানিয়েছেন যে স্থায়ী ‘শান্তি ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা আনতে বর্তমান ইরানি কর্তৃপক্ষের পতন অপরিহার্য’।

পাহলভির এমন বিবৃতির ঠিক দু’দিন আগে, শনিবার (২১ জুন), ইরানের পরমাণু স্থাপনায় বোমা হামলা চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা ইরানের পরমাণু অস্ত্র উন্নয়ন রোধ করতে চায়, কোনো বিস্তৃত যুদ্ধ নয়।

তবে ওই হামলার পর ওয়াশিংটনের কর্মকর্তারা দাবি করেন, মার্কিন বোমা হামলার লক্ষ্য ‘শাসন পরিবর্তন’ নয়। কিন্তু ঠিক পরেরদিনই রোববার (২২ জুন) এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের কট্টর ধর্মীয় শাসকদের উৎখাতের সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের ওই কথার জের ধরে প্যারিসে এক সংবাদ সম্মেলনে উৎখাতকৃত শাহের নির্বাসিত পুত্র রেজা পাহলভি বলেন, ‘এখনই ইরানি জনতার পাশে দাঁড়ানোর মুহূর্ত। অতীতের ভুলগুলি পুনরাবৃত্তি করবেন না। এই শাসনব্যবস্থাকে কোনো প্রাণরক্ষাকারী সাহায্য দেবেন না। শুধুমাত্র এই শাসনের পরমাণু স্থাপনা ধ্বংস করেই শান্তি আসবে না।’

তিনি যোগ করেন, ‘পরমাণু অস্ত্র রোধ ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিয়ে সবার উদ্বেগ সঠিক, কিন্তু কেবল ইরানে একটি গণতান্ত্রিক পরিবর্তনই নিশ্চিত করতে পারে যে এই লক্ষ্যগুলো অর্জিত হবে এবং স্থায়ী হবে।’

পাহলভির এই মন্তব্যের প্রতি ইরানি কর্তৃপক্ষ তৎক্ষণাৎ কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি।

১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবে মার্কিন-সমর্থিত শাহের পতনের পর থেকে পাহলভি প্রায় চার দশক ধরে নির্বাসনে আছেন। ইরানে তার কতটা সমর্থন রয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। এখনও অনেক ইরানি রয়েছেন, যারা শাহের দমনমূলক গোয়েন্দা পুলিশ ‘সাভাক’-কে স্মরণ করে। ইতিপূর্বে ইরানের ব্যাপক বিক্ষোভে রাজতন্ত্রপন্থী ও বিরোধী উভয় শ্লোগানই শোনা গেছে।

কিন্তু কোন ধরনের প্রমাণ ছাড়াই পাহলভি দাবি করেন যে ইরানের শাসনব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে এবং সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনি, তার পরিবার ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা দেশ ছেড়ে পালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

তিনি এও বলেন, ‘এটি আমাদের (ইরানি জনগণ) জন্য বার্লিন প্রাচীর মুহূর্ত। কিন্তু সব বড় পরিবর্তনের মুহূর্তের মতোই, এটি ব্যাপক বিপদের সাথে জড়িত।

ইসরায়েল গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা চালানোর পর থেকে উভয় দেশ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে। ইসরায়েল দাবি করেছে, তারা ইরানের পরমাণু অস্ত্র উন্নয়ন রোধ করতে চায়। অন্যদিকে, ইরান বলে যে তাদের পরমাণু কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে।

রেজা পাহলভিকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে তিনি ভবিষ্যতের কোনো পরিবর্তনের নেতৃত্ব দিতে চান কিনা। জবাবে বলেন, তিনি রাজনৈতিক ক্ষমতা চান না।

তিনি বলেন, ইরানের ভৌগোলিক অখণ্ডতা, ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, সকল নাগরিকের সমতা এবং ধর্ম ও রাষ্ট্রের পৃথকীকরণের ভিত্তিতে একটি পরিবর্তনের মূলভিত্তি তিনি দেখতে চান।

যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেনি, বরং তারা দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচির বিরুদ্ধে লড়ছে মাত্র— এমন মন্তব্য করেছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স।

রোববার (২২ জুন) এনবিসির ‘মিট দ্য প্রেস উইথ ক্রিস্টেন ওয়েলকার’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ করছি না। আমরা যুদ্ধ করছি তাদের পারমাণবিক কর্মসূচির বিরুদ্ধে।

তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে চালানো হামলাগুলোর কারণে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি অনেক বছর পিছিয়ে গেছে। আমার বিশ্বাস, এখন ইরান একটি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে সক্ষম হতে বহু বছর সময় লাগবে।

ভ্যান্স ইরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, তারা আলোচনায় সদিচ্ছার পরিচয় দেয়নি, যার ফলে মার্কিন হামলা অনিবার্য হয়ে ওঠে।

ভ্যান্স আরও বলেন, আমরা ইরানে শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন চাই না। আমরা দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধ চাই না। আমরা শুধু পারমাণবিক কর্মসূচির অবসান চাই, এরপর ইরানের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান নিয়ে কথা বলতে চাই।

ইসরায়েলে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের মোড়কে ক্লাস্টার বোমা ছুড়ছে ইরান। তেহরানের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আইডিএফ’র। দাবি- সম্প্রতি তেলআবিবে চালানো এক হামলায় ব্যবহার করা হয় শক্তিশালী মারণাস্ত্রটি। যদিও এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে কিছুই জানায়নি আইআরজিসি।

১৯ জুন। রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে তেলআবিবে আঘাত হানে ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র। দফায় দফায় বিস্ফোরণে নজিরবিহীন ক্ষয়ক্ষতির শিকার একাধিক আবাসিক এলাকা। এসব মিসাইলগুলোর মধ্যে অন্তত একটি ছিল ক্লাস্টার ওয়ারহেডযুক্ত, এমন দাবি আইডিএফ’র।

ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের চাদরে ঢাকা ভয়ংকর এক মারণাস্ত্রের নাম ক্লাস্টার মিউনিশন। কখনও কখনও আঘাত হানে ব্যালিস্টিক মিসাইলের চেয়েও ভয়ংকর রূপে।


মূলত, ক্লাস্টার মিউনিশন যুক্ত ওয়ারহেডগুলো মাটি থেকে ৭-৮ হাজার মিটার উচ্চতায় আকাশে থাকা অবস্থাতেই ছোট ছোট ওয়ারহেড কিংবা সাবমিউনিশনে বিভক্ত হয়। যা ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকায়। যেখান থেকে পরবর্তীতে ঘটতে থাকে একের পর এক বিস্ফোরণ।

ক্লাস্টার বোমার সাবমিউনিশনগুলো অনেকদিন মাটিতে সক্রিয় এবং অবিস্ফোরিত অবস্থায় থাকতে পারে। অজান্তে কেউ সংস্পর্শে চলে এলে বেড়ে যায় প্রাণহানির শঙ্কা। অর্থাৎ এক ধরনের জীবন্ত মাইন হিসেবেও বিবেচনা করা যেতে পারে এটিকে।


কনভেনশন অন ক্লাস্টার মিউনিশন নামে একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি হয় ২০০৮ সালে। নিষিদ্ধ করা হয় ক্লাস্টার বোমার সংরক্ষণ, পরিবহন ও ব্যবহার। ১০০টির বেশি দেশ তাতে সই করে। অবশ্য চুক্তিবদ্ধ হয়নি যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল, ইরান।


যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীনের মতো পরাশক্তিসহ হাতেগোনা কয়েকটি দেশের কাছেই রয়েছে ক্লাস্টার প্রযুক্তির ক্ষেপণাস্ত্র ভাণ্ডার। ধারণা করা হয়, ইরানের রহস্যময় ক্ষেপণাস্ত্র বহরেও রয়েছে এই ওয়ারহেড। যার মধ্যে অন্যতম, খায়বার এবং ফাজর থ্রি ব্যালিস্টিক মিসাইল।