বিগত সরকার আমলে যারা বিনা ভোটের নির্বাচন করেছে তাদেরকে চাকরি থেকে বিদায়ের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপন। শুক্রবার (৪ জুলাই) সকালে প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় এ দাবি জানান তিনি।

আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনও ছিল বির্তকিত। কারণ আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের জন্যই ওয়ান ইলেভেন সৃষ্টি করা হয়েছিল।

বির্তকিত নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনা হয়েছিল। ওই নির্বাচন বাংলাদেশকে ভারতের হাতে তুলে দেয়ার নীল নকশা ছিল বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির এই ভাইস প্রেসিডেন্ট।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে ছিল, জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। তাদের রাজনীতিতে ফেরার সুযোগ নেই। আওয়ামী লীগ এখন মুসলিম লীগের পথে বলেও জানান তিনি।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেছেন, আগামী নির্বাচনে মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে পারবে। নির্বাচনটি স্মরণকালের সবচেয়ে ভালো করতে সরকার বদ্ধ পরিকর।

শুক্রবার (২ জুলাই) বিকেল ৩টার দিকে জেলার মাদারগঞ্জে অনুসন্ধান কূপ খনন কাজ পরিদর্শনে যান তিনি। এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে আলপকালে এ কথা বলেন তিনি।

ফাওজুল কবির খান বলেন, আগামী নির্বাচনে প্রত্যেক প্রার্থীর এজেন্টরা ভোটকেন্দ্রে থাকতে পারবেন। উন্মুক্ত ও সুষ্ঠুভাবে ভোট গণনার সুযোগ থাকবে। এ সময় নির্বাচনে জয়ীদের সরকার স্বাগত জানাবে বলেও জানান তিনি।

জামালপুর-১ অনুসন্ধান কূপ পরিদর্শন শেষে মাদারগঞ্জের সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প পরিদর্শনের কথা রয়েছে বিদ্যুৎ উপদেষ্টার। এ সময় বিদ্যুৎ ও জ্বালানী সচিব মো. সাইফুল ইসলাম, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান রেজানুর রহমান, বাপেক্সের এমডি প্রকৌশলী মো. ফজলুল হক ও জামালপুরের জেলা প্রশাসক হাছিনা বেগমসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

১৯৭৩ সালের পর, যুক্তরাষ্ট্রের ডলার ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে সবচেয়ে খারাপ পারফরম্যান্স করেছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অর্থনৈতিক নীতির কারণে বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীরা ডলার বিক্রি করতে শুরু করেছেন, যা ডলারের ‘সেফ হ্যাভেন’ (নিরাপদ মুদ্রা) অবস্থানকে হুমকির মুখে ফেলেছে।

ডলার সূচকে রেকর্ড পতন


ডলার ইনডেক্স, যা পাউন্ড, ইউরো ও ইয়েনসহ ছয়টি প্রধান মুদ্রার বিপরীতে ডলারের মান পরিমাপ করে, ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে ১০.৮% নিচে নেমেছে। ট্রাম্পের অস্থির ‘শুল্ক নীতি’ এবং ফেডারেল রিজার্ভের স্বাধীনতা নিয়ে তার সমালোচনা ডলারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমিয়েছে।

এছাড়া, কংগ্রেসে আলোচিত ট্রাম্পের ‘বিগ বিউটিফুল’ ট্যাক্স বিল নিয়ে অর্থনীতিবিদদের উদ্বেগ রয়েছে। এই বিলটি আগামী দশকে যুক্তরাষ্ট্রের ঋণের বোঝা ট্রিলিয়ন ডলার বাড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যার ফলে ট্রেজারি বন্ড মার্কেট থেকে বিনিয়োগকারীরা সরে যাচ্ছেন।

ডলারের পতনের কারণ

 

১. ট্রাম্পের শুল্ক যুদ্ধ: গত ২ এপ্রিল, ট্রাম্প প্রশাসন বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের পণ্য রফতানিতে শুল্ক আরোপ করে, যা মার্কিন অর্থনীতির প্রতি আস্থা কমায়। এরপর ‘এসঅ্যান্ডপি ৫০০’ সূচক তিন দিনে ৫ ট্রিলিয়ন ডলার মূল্য হারায়

২. ফেডারেল রিজার্ভের স্বাধীনতা নিয়ে সংশয়: ট্রাম্পের ফেডের সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপের অভিযোগ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

৩. বৃহৎ কর বিল: ট্রাম্পের প্রস্তাবিত কর কাটছাঁট ও ঋণ বৃদ্ধির পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের ঋণ-টু-জিডিপি অনুপাত বাড়িয়ে দেবে, যা দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য ঝুঁকি তৈরি করেছে।

৪. সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা: মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ চলতি বছরে ২-৩ বার সুদের হার কমাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যা ডলারের মান আরও দুর্বল করতে পারে।

 

স্বর্ণের দাম বেড়েছে, ডলারের মান কমেছে

ডলার দুর্বল হওয়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো তাদের ‘ইউএস-ডলার’ রক্ষায় স্বর্ণে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে, যার ফলে সোনার দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে।

ডলারের পতনের প্রভাব

  • মার্কিন রপ্তানি সস্তা হবে, কিন্তু শুল্ক নীতির কারণে এর সুবিধা অনিশ্চিত।
  • উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য সুখবর: ডলার দুর্বল হলে জাম্বিয়া, ঘানা বা পাকিস্তানের মতো ঋণগ্রস্ত দেশগুলোর ডলার-ঋণ পরিশোধের বোঝা কমবে।
  • কমোডিটির দাম বাড়বে: তেল, ধাতু ও কৃষিপণ্য রপ্তানিকারক দেশগুলো (ইন্দোনেশিয়া, নাইজেরিয়া, চিলি) লাভবান হবে।

অন্যান্য মুদ্রার অবস্থা

  • ইউরো ১৩% শক্তিশালী হয়েছে (১ ইউরো = ১.১৭ ডলার)।
  • জার্মানি ও ফ্রান্সের বন্ড-এ বিনিয়োগ বেড়েছে।
  • ইউরোপীয় শেয়ার মার্কেট ২০২৫ সালে ১৫% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ডলারে হিসেব করলে ২৩% লাভ।

যদিও ডলার এখনও বিশ্বের প্রধান রিজার্ভ কারেন্সি, তবে ট্রাম্পের নীতির কারণে এর আস্থা কমছে। ব্যাংক জে সাফ্রা স্যারাসিনের প্রধান অর্থনীতিবিদ কার্স্টেন জুনিয়াস বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র এখন বিনিয়োগের জন্য কম আকর্ষণীয়। সেই সাথে, মার্কিন সম্পদ আগের মতো নিরাপদ নয়।”

যদি বিনিয়োগকারীরা ডলার বিক্রি অব্যাহত রাখে, তবে ডলারের দাম আরও পড়তে পারে। অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, ২০২৫ সালের শেষ পর্যন্ত ডলারের পতন অব্যাহত থাকতে পারে।

সূত্র: আলেক্স কোজুল-রাইট (অর্থনৈতিক বিশ্লেষক), আল জাজিরা।

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ব্যাংক খাতে বড় সংস্কারগুলো করা হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। বুধবার (২ জুলাই) এসএমই ফাউন্ডেশন-ইআরএফ মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) বিভক্তি ইস্যুর জটিলতায় কিস্তির ছাড়ের বৈঠকে বসতে চায়নি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। এনবিআর চেয়ারম্যানের চিঠি আমলে না নেওয়ায় আমাকে ব্যাখ্যা দিতে হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, অর্থনীতিতে মাঝারি শিল্পের অবদান অনেক। শুধু স্বল্পোন্নত নয়, উন্নত দেশেও এসএমই’র অবদান আছে। এসএমই খাতে প্রযুক্তির মাধ্যমে আধুনিকায়ন প্রয়োজন। নারীদের ক্ষমতায়ন এসএমই’র মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি হয়েছে। এই খাতের উন্নয়নে ব্যাংকার ও নীতিনির্ধারকদের নীতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংককে এগিয়ে আসতে হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় সহযোগিতা করবে।

একই অনুষ্ঠানে এসএমই ফাউন্ডেশন-ইআরএফ মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন যমুনা টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার রিমন রহমান।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে একান্ত বৈঠকের বিষয়ে মুখ খুলেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। গত ২৬ জুন দু’জনের মধ্যে বৈঠক হয়।

মঙ্গলবার (১ জুলাই) নির্বাচন ভবনে গণমাধ্যমকে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এটা একান্তই সৌজন‍্য সাক্ষাৎ ছিল, ফরমাল কোনও বৈঠক করিনি। যখন দলীয় সরকার থাকে তখন সরকারপ্রধানের সঙ্গে সিইসির সাক্ষাৎ হয় না। কিন্তু এখন আমি যেমন নিরপেক্ষ, প্রধান উপদেষ্টাও নিরপেক্ষ।

তিনি আরও বলেছেন, এই মুহূর্তে নির্বাচন আলোচনার কেন্দ্রে। স্বভাবতই কথা প্রসঙ্গে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা জানতে চেয়েছেন, অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন‍্য আমারা প্রস্তুত আছি কি না। আমি বলেছি, আমরা প্রস্তুতির ফুল গিয়ারে আছি।

গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়েজনে প্রধান উপদেষ্টা ও ইসির আন্তরিকতা প্রশ্নাতীত বলেও মন্তব্য করেন এ এম এম নাসির উদ্দীন। জানান, ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিলকে লক্ষ্য করে কমিশন এখন পর্যন্ত জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

সিইসি আরও জানান, যথাসময়ে ভোটের তারিখ জানা যাবে। ইসি থেকেই জানতে পারবে সকলে। এজন্য একটু অপেক্ষা করার কথা বলেন তিনি।

আবু সাঈদের হত্যার ঘটনায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা এবং ১৬ জুলাই কে শহীদ আবু সাঈদ দিবস করার দাবি জানিয়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা।

সকালে রংপুরে নিজ বাড়িতে গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে কথা বলেন আবু সাইদের বাবা মকবুল হোসেন, মা মনোয়ারা বেগম ও বড় ভাই আবু হোসেন।

এসময় বাবা মকবুল হোসেন বলেন, আবু সাঈদ হত্যকাণ্ডে শুধু পুলিশ নয়, ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগসহ দলের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন ও রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রক্টরসহ যেসকল কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত ছিলো তাদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে।

এসময় মা মনোয়ারা বেগম বলেন, সমাজে যদি ধনী-গরীবের বৈষম্য নিরসন না হয় তবে, আবু সাঈদের রক্ত বৃথা যাবে। ১৬ জুলাই কে শহীদ আবু সাঈদ দিবস এবং জুলাইয়ের যেকোন এক দিনকে জুলাই শহীদ দিবস হিসেবে ঘোষণার দাবিও জানান পরিবারের সদস্যরা।

রাজুভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে শুরু হয়েছিল যে ন্যায্যতার লড়াই তার আজ ১ বছর পূর্ণ হলো। যে স্বপ্ন আর সম্ভাবনায় রচিত হয়েছিলো ৩৬ জুলাই, ১ বছরে সে পথে কতটা এগুলো বাংলাদেশ? বন্ধ হয়েছে কি বৈষম্য? মুক্তি পেয়েছে কি কথা বলার স্বাধীনতা? গন্ত্রতন্ত্রই বা কতটুকু পুঃনপ্রতিষ্ঠিত হলো? সে প্রশ্ন সবার।

১৮’র কোটা আন্দোলন ফিরে আসে ২৪’র পহেলা জুলাইতে। তপ্ত রোদে একদল শিক্ষার্থী ন্যায্যতার দাবি নিয়ে রাজু ভাস্কর্যের সামনে দাঁড়ায়। স্লোগানে বারুদ কন্ঠ— ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’।

শুরু নতুন ইতিহাস নির্মাণের লড়াই। কোটা বাতিলের পরিপত্র পুনর্বহালের জন্য সরকারকে দেয়া হয় আল্টিমেটাম। এর ফাঁকে চলে যৌক্তিক আন্দোলনের পক্ষে অনলাইন-অফলাইনে জনমত তৈরির কাজ। ৭ জুলাই পালিত হয় বাংলা ব্লকেড। ধারাবাহিকভাবে চলে বিক্ষোভ-অবরোধ। আন্দোলনে নামে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও। শুরু হয় তাদের অপবাদ দেয়ার অপচেষ্টা। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের নিয়ে কটূক্তি করে বসেন স্বয়ং শেখ হাসিনা। এতে তীব্র ক্ষোভে ফেঁটে পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

কোটার বিষয়ে শেখ হাসিনা সেদিন বলেছিলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের নাতিপুতিরা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিপুতিরা পাবে?

সেই ক্ষোভ স্ফুলিঙ্গের মতো ছড়িয়ে যায় দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। বন্দুকের গুলির সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে শহীদ হোন রংপুরের আবু সাঈদ। রাষ্ট্রযন্ত্রের সীমাহীন দমন-নিপীড়নের সাথে পরদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলে পড়ে ছাত্রলীগ। বন্ধ হয় ক্যাম্পাস। আসে হল ছাড়ার নির্দেশ। তবুও কিছু তরুণ চালিয়ে যান আন্দোলন। প্রতিবাদে যোগ দেয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

তীব্র আন্দোলনের মুখে আদালত থেকে ২১ জুলাই রায় আসে কোটা সংস্কারের। কিন্তু তখনো থামেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলি, হামলা আর গ্রেফতার। সরকারের চাপেও তাই আন্দোলন স্থগিতে রাজি হননি সমন্বয়করা। তুলে নেয়া হয় তাদের ছয়জনকে। বাকিরা ঘোষণা করেন ৯ দফা। আন্দোলনে যোগ দিতে শুরু করে রাজনৈতিক দল থেকে সাধারণ মানুষ। পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় ঢাকার সব প্রবেশপথ। অনলাইন-অফলাইনে চলতে থাকে অভিনব নানা কর্মসূচি। বাড়তে থাকে পুলিশ আর বন্দুকধারীদের গুলিতে প্রাণ হারানো বিপ্লবী বন্ধুদের সংখ্যাও। রেমিট্যান্স বন্ধ করে প্রতিবাদে শামিল হোন প্রবাসীরা।

৩ আগস্ট শুক্রবার। ডাক আসে শহীদ মিনারে। সেদিন ঢাকার সব সড়ক মেশে স্মৃতির মিনারে। লাখো মানুষের জমায়েত থেকে ঘোষণা এলো এক দফার। শেখ হাসিনাকে আর চায় না বাংলাদেশ।

এক দফার ঘোষণায় আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে স্বৈরাচারের রেজিম। বাড়তে থাকে হত্যাযজ্ঞ। পুড়িয়ে ফেলা হয় মরদেহ। এর মাঝেই প্রথমে ৬ আগস্ট, পরে ৫ তারিখেই লংমার্চের কর্মসূচি দেন জুলাই যোদ্ধারা। রচিত হয় নতুন ইতিহাস। দেশ ছেড়ে পালান শেখ হাসিনা। শৃঙ্খল ভাঙার আনন্দে মেতে ওঠে গোটা দেশ।

সেই আনন্দ আর ত্যাগের এক বছরের মাথায় স্বপ্নদেখা তরুণদের কাছে প্রশ্ন ছিল কেমন আছে বাংলাদেশ?

জবাবে জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ফ্যাসিস্ট রাজনৈতিক দলকে আমরা উৎখাত করতে পেরেছি। ফলে আমাদের একটা ধাপ অর্জিত হয়েছে। কিন্তু দেশটাকে নতুনভাবে গঠন করার কাজটা এখনও বাকি। সেই জায়গায় অপ্রাপ্তি, সেই জায়গায় হতাশা। তবে এখনও সুযোগ রয়েছে বলে মনে করেন তিনি। জুলাইয়ের ওপর দাঁড়িয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে বলেও উল্লেখ করেন এনসিপির এ নেতা।

অপরদিকে, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘যেই চাওয়ার জায়গা থেকে এতগুলো মানুষ প্রাণ দিলো, সেই জায়গায় যদি কম্প্রোমাইজড হন, তাহলে মানুষ প্রত্যাখ্যান করবে।’

কথা ছিল পরিবারতন্ত্র, স্বজনপ্রীতির ঊর্ধ্বে উঠে হবে সংস্কার। উন্নয়ন হবে সাধারণের জীবনমানের। সে প্রত্যাশা কতটা মিটেছে?

এমন প্রশ্নের জবাবে নাহিদ ইসলাম বলেন, বিপ্লবের পরে যে প্রত্যাশা থাকে, মানুষের মধ্যে সেই প্রত্যাশা ছিল। ১৭ বছরের যে ক্ষোভ, বঞ্চনা, বৈষম্য সেটার দ্রুত সমাধান চেয়েছিল সবাই। সেই প্রত্যাশা আসলে পূরণ হয়নি।

আর উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া বলেন, ‘আমরা নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের কথা বলেছিলাম, শুধু হাসিনার পতনের কথা বলিনি। আমরা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার পতনের কথা বলেছিলাম।’

যদিও আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিল যে ছাত্ররা, তারাই এখন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে। চোখে তাদের এক আকাশ সমান স্বপ্ন। গড়বে নতুন সোনার বাংলা। আর তাতে সমর্থন দিচ্ছে দেশের আপামর জনতা। আশায় বুক বেঁধে আছে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। ধারণা তাদের, পরিবর্তন আসবেই এ দেশে। তারই অপেক্ষার প্রহর গুনছেন তারা।

রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলার ৯ বছর আজ। বাংলাদেশের দেশের ইতিহাসে এটি সবচেয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে বিবেচিত হয় হলি আর্টিজান হামলাকে।

এই হামলায় নিহত হয়েছিলেন বিদেশিসহ মোট ২২ জন। নিহতদের মধ্যে ইতালি, জাপান, ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা ছিলেন। এছাড়া, হামলায় দুজন পুলিশ কর্মকর্তাও প্রাণ হারান এবং অনেকে আহত হন।

দিনটি ছিল ২০১৬ সালের ১ জুলাই (শুক্রবার)। রাত পৌনে ৯টার দিকে খবর পাওয়া যায় রাজধানীর গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কের হোলি আর্টিজান বেকারিতে ‘সন্ত্রাসীদের সঙ্গে’ পুলিশের গোলাগুলি হচ্ছে। নব্য জেএমবির পাঁচ সন্ত্রাসী বেকারিতে ঢুকে প্রথমে নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে ১৮ বিদেশি নাগরিকসহ ২২ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে।

তাদের মধ্যে ৯ জন ইতালির, সাতজন জাপানের, এক ভারতীয় এবং তিনজন বাংলাদেশি নাগরিক ছিলেন। তিনজন বাংলাদেশির মধ্যে একজনের দ্বৈত নাগরিকত্ব ছিল। ওই হামলা প্রতিরোধ করতে গিয়ে প্রাণ হারান দুই পুলিশ কর্মকর্তা।

ওই দিন পুরো রাত স্পর্শকাতর বিবেচনায় কয়েকবার প্রস্তুতি নেওয়া সত্ত্বেও অভিযান চালানো থেকে বিরত থাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরে কমান্ডো অভিযানে নিহত হয় পাঁচ সন্ত্রাসী। আইএসের পক্ষ থেকে হামলাকারীদের মধ্যে পাঁচজনকে তাদের ‘সৈনিক’ বলে দাবি করে, হামলার দায় নেয় তারা।

সেদিন যা ঘটেছিল: ২০১৬ সালের ১ জুলাই দিনটি ছিল শুক্রবার। সন্ধ্যার পর হঠাৎ করে খবর আসে গুলশানে ‘সন্ত্রাসীদের সঙ্গে’ পুলিশের গোলাগুলি হচ্ছে। রাত সাড়ে ৯টার দিকে গোলাগুলিতে আহত হন বনানী থানার ওসি মোহাম্মদ সালাউদ্দীন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। রাত ১০টার দিকে পুলিশ, র‍্যাব এবং আধা সামরিক বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের কয়েকশ সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে অবস্থান নেন। গণমাধ্যমকর্মীরাও ৭৯ নম্বর রোডের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থান নেন।

রাত সোয়া ১১টার দিকে হাসপাতালে মারা যান বনানী থানার ওসি মোহাম্মদ সালাউদ্দীন। রাত ৪টা পর্যন্ত অস্ত্রধারীদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ স্থাপন করতে পারেননি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

রাতভর হলি আর্টিজান বেকারি সংলগ্ন এলাকা ঘিরে রাখার পর যৌথ সেনা, নৌ, পুলিশ, র‍্যাব এবং বিজিবির সমন্বয়ে যৌথ কমান্ডো দল গুলশানে অভিযানের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেয়। সকাল পৌনে ৮টায় কমান্ডো বাহিনী অভিযান শুরু করে। অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত দলের সদস্যরা রেস্টুরেন্টের ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়।

সকাল সোয়া ৮টায় বেকারি থেকে প্রথম দফায় নারী ও শিশুসহ ছয়জনকে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়। পাশের একটি ভবন থেকে একজন বিদেশি নাগরিক তার মোবাইল ফোনে সেটি ধারণ করেন। ৮টা ৫৫ মিনিটে ভবনের নিয়ন্ত্রণ নেয় অভিযানকারীরা। গোয়েন্দা দল ভবনের ভেতর বিস্ফোরকের জন্য তল্লাশি শুরু করে। কিছুক্ষণ পরই আলামত সংগ্রহের কাজ শুরু করে গোয়েন্দারা।

৯টা ১৫ মিনিটে অভিযান শেষ হয়। কমান্ডো অভিযানের মধ্য দিয়ে ঢাকার গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে প্রায় ১২ ঘণ্টার রক্তাক্ত জিম্মি সংকটের অবসান হয়।

‘থান্ডারবোল্ট’ নামে সেনাবাহিনীর কমান্ডোরা যে অভিযান চালান সেখানে জঙ্গি হামলায় সরাসরি অংশ নেওয়া পাঁচ তরুণের সবাই মারা যান। তারা হলেন মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ ওরফে মামুন, নিবরাজ ইসলাম, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল।

সকাল ১০টায় চার বিদেশিসহ ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধারের খবর জানানো হয়। রেস্টুরেন্টের ভেতরে অজ্ঞাত পাঁচজনের লাশ পাওয়ার কথা পুলিশ জানায়। ১১টা ৫০ মিনিটে অভিযানে সন্ত্রাসীদের ছয়জন নিহত এবং একজন ধরা পড়েছে বলে নিশ্চিত করা হয়।

শহীদের রক্তের উপর দিয়ে ক্ষমতায় এসেও সরকার জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র দিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মানবাধিকার কর্মী ও আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।

আজ মঙ্গলবার (১ জুলাই) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এবি পার্টির জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ৩৬ দিন উদ্‌যাপনের উদ্বোধনী ও আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।

মাহমুদুর রহমান বলেন, আবার যাতে কেউ শেখ হাসিনার মত ফ্যাসিবাদী হয়ে উঠতে না পারে তার জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে। ১০ বছরে বেশি প্রধানমন্ত্রী নয়, এ প্রস্তাবে সকল দলের ঐকমত্যের মধ্যে দিয়ে তার প্রাথমিক ধাপ অর্জিত হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

এ সময়, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, দেশকে পরাধীনতা ও আধিপত্যবাদ থেকে মুক্ত করতে হবে। সেইসাথে, আবারও ফ্যাসিবাদ রুখতে প্রয়োজনে জীবন দেয়ার অঙ্গীকার করেন তিনি।

এর আগে, এবি পার্টির ৩৬ দিনের কর্মসূচির উদ্বোধন করে শহীদ নাজমুল কাজির স্ত্রী মারিয়া সুলতানা রাখি।

২০২৫-২৬ অর্থবছরের মধ্যে নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা বিবেচনায় আগেই নির্বাচনী বাজেট করে রেখেছে অন্তর্বর্তী সরকার। নির্বাচনী বাজেট নিয়ে সরকার কোনো কার্পণ্য করবে না—বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

মঙ্গলবার (১ জুলাই) দুপুরে সচিবালয়ে ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া ইউরিয়া সার কেনার অনুমোদন দেয়া হয়েছে ক্রয় সংক্রান্ত কমিটিতে।

এদিকে বৈঠক শেষে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এনবিআরের কর্মকর্তাদের আন্দোলনের ফলে চট্টগ্রাম বন্দর তিনদিন বন্ধ থাকলেও আমদানি-রফতানির ওপর খুব বেশি প্রভাব পড়েনি। তবে আর্থিকভাবে কতটা ক্ষতি হয়েছে, সে হিসাব এখনও হয়নি।

তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালনার দায়িত্ব আগামী ছয় মাসের জন্য নতুন একটি প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হবে। কারা পাবেন, তা নিয়ে বুধবারের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে, তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। এমনকি সংবিধান বাতিল করে গণপরিষদ নির্বাচন দিতে হবে।

আজ মঙ্গলবার (১ জুলাই) বেলা ১১টায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে পুলিশের গুলিতে নিহত আবু সাঈদের কবর জিয়ারত শেষে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

আখতার হোসেন বলেন, আবু সাঈদ আমাদের দ্রোহের প্রতীক। তার কবরের পাশ থেকে আমরা নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখি। আমরা আবু সাঈদের কবর ছুঁয়ে শপথ করছি— যতক্ষণ না নতুন বন্দোবস্তের ভিত্তিতে, মৌলিক সংস্কারের ভিত্তিতে বৈষম্যবিরোধী বাংলাদেশ গঠিত হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির এই সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।

তিনি আরও বলেন, বিচার, সংস্কার ও নতুন সংবিধানের দাবিতে দেশ গড়ার জুলাই পদযাত্রার সূচনা আমরা করলাম শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে। হাজার হাজার মানুষের আত্মত্যাগ ও রক্তদানের মধ্য দিয়ে আমরা ফ্যাসিবাদের কবর রচনা করেছি। এজন্য অবশ্যই পুরনো কাঠামো ভেঙে নতুন বন্দোবস্ত নির্মাণ করতে হবে, মৌলিক সংস্কার আনতে হবে।

আখতার বলেন, জুলাই বিপ্লবে যারা হামলা চালিয়েছে, মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে—তাদের বিচার করতে হবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশের পুরনো ‘মুজিববাদী’ সংবিধান বাতিল করে গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে হবে। সব মিলিয়ে একটি নতুন বাংলাদেশ পুনর্গঠন করতে হবে।

এর আগে সকাল সাড়ে দশটায় দরটির আহ্বায়াক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখপাত্র নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, দক্ষিণাঞ্চল মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, উত্তরাঞ্চল মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্থা শারমিন, যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা, যুগ্ম-মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) মাহমুদা মিতু সহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেন।

পরে নেতৃবৃন্দ শহীদ আবু সাঈদের বাড়িতে গিয়ে তার বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তারা আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার পাশাপাশি পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।

কবর জিয়ারতের মাধ্যমেই শুরু হয় ‘বেশ করতে, দেশ গড়তে’ শীর্ষক জুলাই পদযাত্রা। গাইবান্ধার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে পলাশবাড়ী, সাদুল্লাপুর, সুন্দরগঞ্জ হয়ে পদযাত্রা রংপুরে পৌঁছায়। নগরীতে পদযাত্রা শেষে দিনের কর্মসূচি শেষ হয়। পরে তারা কাউনিয়ায় পদযাত্রায় অংশ নেবেন।

আগামী জাতীয় ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘ভোটকেন্দ্র স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা নীতিমালা-২০২৫’ জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে বাদ দেয়া হয়েছে ভোটকেন্দ্র স্থাপনে জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও), ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সমন্বয়ে গঠিত কমিটি এবং ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পদ্ধতি। আজ সোমবার (৩০ জুন) এই নীতিমালা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে।

নীতিমালা থেকে জানা যায়, মহানগর, জেলা, উপজেলা ও থানা পর্যায়ের প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে ভোটকেন্দ্র স্থাপন কমিটি রাখা হয়নি। ভোটকেন্দ্র স্থাপনে নির্বাচন কর্মকর্তাদের একক ক্ষমতা রাখা হয়েছে। পাশাপাশি বাদ দেয়া হয়েছে ইভিএমে ভোট দেওয়ার জন্য কক্ষ নির্ধারণের বিষয়টিও।

২০২৩ সালের ভোটকেন্দ্র নীতিমালায় ভোটকেন্দ্র নির্ধারণের ক্ষেত্রে ডিসি ও এসপিদের সমন্বয়ে একটি জেলা কমিটি গঠন করেছিল নির্বাচন কমিশন। এ কমিটির মাধ্যমেই ভোটকেন্দ্রের স্থান নির্ধারণ ও পুনর্বিন্যাসের সিদ্ধান্ত নেয়া হতো। তবে এই কমিটিগুলোর নিরপেক্ষতা ও রাজনৈতিক প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় নতুন নীতিমালা অনুমোদন দিয়েছে ইসি।

নীতিমালা অনুযায়ী, বরাবরের মতো গড়ে ৩ হাজার ভোটারের জন্য একটি ভোটকেন্দ্র এবং গড়ে ৫০০ জন পুরুষ ও ৪০০ জন নারী ভোটারের জন্য একটি করে ভোটকক্ষ নির্ধারণ করা হয়েছে।