ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস (জর্জ মারিও বার্গোগলিও) মারা গেছেন। সোমবার (২১ এপ্রিল) স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরেই শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন রোমান ক্যাথলিক গির্জার প্রধান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে ভারত সরকার তার প্রতি সম্মান জানিয়ে ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এক বিবৃতিতে জানায়, মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) ও বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হবে। এরপরতৃতীয় দিনটি পোপের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার দিন পালন করা হবে।
২০১৩ সালের ১৩ মার্চ পোপ নির্বাচিত হন জর্জ মারিও বার্গোগ্লিও। পোপ হিসেবে নির্বাচিত হবার পর নাম পরিবর্তন করে রাখেন ‘ফ্রান্সিস’। আর্জেন্টিনার এই ধর্মযাজক দরিদ্রদের প্রতি সহমর্মিতার জন্য বেশ পরিচিত ছিলেন।
জাঁকজমকপূর্ণ জীবন খুবই অপছন্দ ছিল পোপ ফ্রান্সিসের। এমনকি পূর্বসূরীদের ব্যবহৃত অ্যাপোস্টলিক প্রাসাদের অলংকৃত বাসস্থানে কখনোই বাস করেননি তিনি।
তিনি এমন একটি গির্জার দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন যা শিশুদের যৌন নির্যাতন কেলেঙ্কারির জন্য বেশ সমালোচিত ছিল। সেই সাথে ভ্যাটিকানের আমলাতান্ত্রিক কোন্দলে জর্জরিত ছিল। গির্জায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার একটি স্পষ্ট ম্যান্ডেট নিয়েই তিনি পোপ নির্বাচিত হন।
স্বামীকে ঘুষ নিতে সহায়তা করার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক সিনেটর ম্যানেনডেজের স্ত্রী নাদিন ম্যানেনডেজ। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে তুরস্কের সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি এ তথ্য জানায়।
অভিযোগ রয়েছে, রাজনৈতিক সুবিধা দেয়ার বিনিময়ে স্বামীকে ঘুষ নিতে সহায়তা করেছিলেন নাদিন। এর দায়ে সোমবার তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে নিউ ইয়র্ক সিটির আদলত। নাদিনকে ঘুষ, ন্যায়বিচারে বাধা এবং ষড়যন্ত্রের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
মামলার নথিতে নগদ ১০ মিলিয়ন ডলার, সোনার বার এবং একটি বিলাসবহুল গাড়ি ঘুষ নেয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রসিকিউটররা বলেছেন, নাদিন তার স্বামীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন। যারা সিনেটরের কাছে সহায়তা চেয়েছেন তাদের সঙ্গে লেনদেনের বিষয়ে লিয়াজোঁ করেছিলেন নাদিন। তার বিরুদ্ধে অর্থ আদায় এবং তা গোপন করার অভিযোগেও নাদিনকে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত।
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি ট্রেড-ওয়ারের মধ্যেও চীনের অর্থনীতি বছরের প্রথম তিন মাসে পাঁচ দশমিক চার শতাংশ বেড়েছে, যা তাদের প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে গেছে। এক প্রতিবেদনে ইউএস নিউজ ম্যাগাজিন নিউজউইক এ তথ্য জানায়।
চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো (এনবিএস) বুধবার (১৬ এপ্রিল) প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) চীনের অর্থনীতি ৫.৪% প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে— যা ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের জরিপে বিশ্লেষকদের পূর্বাভাস (৫.১%) ছাড়িয়ে গেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ ও প্রযুক্তি নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও চীনের অর্থনীতি এই ইতিবাচক ফলাফল দেখিয়েছে।
চীনে সরকারি প্রণোদনা এবং উচ্চ-প্রযুক্তি উৎপাদনের সম্প্রসারণের ফলে দেশটির শিল্পখাতে প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়েছে। বৈদ্যুতিক গাড়ি (ইভি), সৌর প্যানেল এবং ব্যাটারি রফতানিতে চীন বিশ্ববাজারে আধিপত্য বজায় রেখেছে।
এছাড়াও চীনের ‘ডুয়াল সার্কুলেশন’ নীতির অধীনে স্থানীয় বাজারে ভোগ্যপণ্যের চাহিদা বেড়েছে। লুনার নিউ ইয়ার (চন্দ্র নববর্ষ) উপলক্ষে দেশটিতে খুচরা বিক্রয় ৬.৮% বৃদ্ধি পেয়েছে।
মার্কিন বাজারে শুল্কের প্রভাব কমাতে চীন ইতোমধ্যে ইউরোপ, রাশিয়া ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় রফতানি বাড়িয়েছে।বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই)-এর মাধ্যমে নতুন বাজার তৈরি করা হয়েছে।
আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস অনুযায়ী, চীন ২০২৫ সালে ৫%-এর কাছাকাছি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পারে, যা বৈশ্বিক মন্দার প্রেক্ষিতে একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য।
তবে, জলবায়ু নিয়মকানুন (সিবিএএম) এবং ইউরোপীয় বাজারে পরিবেশগত শুল্ক চীনের রফতানিকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশ্লেষকরা।
বাংলাদেশের সঙ্গে বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার অঙ্গীকার প্রতিফলিত হয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তান। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তা জানানো হয়।
এতে উল্লেখ করা হয়, ১৫ বছর পর পাকিস্তান ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের ষষ্ঠ দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো। বৈঠকটি ঢাকায় সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মো. জসিম উদ্দিন বৈঠকে নিজ নিজ পক্ষের নেতৃত্ব দেন।
বৈঠকে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষাগত ও কৌশলগত সহযোগিতাসহ নানা বিষয়ে মতবিনিময় করা হয়। পাশাপাশি দুই দেশের অভিন্ন ইতিহাস, সাংস্কৃতিক বন্ধন এবং জনগণের অভিন্ন আকাঙ্ক্ষার ওপর জোর দেয়া হয়। নিউইয়র্ক, কায়রো, সামোয়া ও জেদ্দায় সম্প্রতি দুই পক্ষের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের যোগাযোগ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। ওই সব যোগাযোগ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার ক্ষেত্রে সহায়তা করেছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তান।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উভয় দেশ দ্বিপক্ষীয় চুক্তিগুলো দ্রুত চূড়ান্তকরণ, নিয়মিত প্রাতিষ্ঠানিক সংলাপ এবং বাণিজ্য, কৃষি, শিক্ষা ও সংযোগ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। পাকিস্তান তাদের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার সুযোগ দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ মৎস্য ও সামুদ্রিক বিষয়ে কারিগরি প্রশিক্ষণের প্রস্তাব দিয়েছে। পাকিস্তানের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তির প্রস্তাবে বাংলাদেশ কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেছে এবং শিক্ষা খাতে আরও গভীর সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে।
ওই বৈঠকে দুই পক্ষ করাচি ও চট্টগ্রামের মধ্যে সরাসরি নৌযান চলাচল শুরুর বিষয়টিকে স্বাগত জানায়। দুই পক্ষ সরাসরি আবার আকাশপথে যোগাযোগ চালুর ওপর গুরুত্বারোপ করে। ভ্রমণ ও ভিসা সহজীকরণে অগ্রগতির প্রতিও সন্তোষ প্রকাশ করেছে দুই দেশ।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ক্রীড়া, গণমাধ্যম ও সংস্কৃতিতে বড় পরিসরে সহায়তায় বিভিন্ন সমঝোতা স্মারক নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। উভয় দেশ সার্কের কার্যক্রম পুনরুজ্জীবিত করার পক্ষে মত দিয়েছে।
বৈঠকে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন ও সেখানে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিন্দা জানানো হয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়। ২০২৬ সালে ইসলামাবাদে দুই দেশের মধ্যে পরবর্তী বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে সিদ্ধান্তের কথাও জানানো হয়।
ঢাকার সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধে জড়াতে চায় না দিল্লি। দুই দেশের উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে ভারতের বেশ কিছু সরকারি সূত্র এমনই দাবি করেছে বলে জানিয়েছে দেশটির গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।
ঢাকা বাণিজ্য বিষয়ক যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটির বদলে কোনো পাল্টা ব্যবস্থা দিল্লি হয়ত নেবে না বলেও এই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।
দেশটির সরকারি সূত্রের বরাতে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিজেদের বিমানবন্দর ও স্থল বন্দরের জট কমাতে বাংলাদেশকে দেয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে ভারত। এই ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধার আওতায় নেপাল ও ভুটানে বাংলাদেশের পণ্য রফতানি করা হতো। তবে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের কোনো প্রভাব পড়বে না বলে দাবি ভারত সরকারের।
যদিও দুই দেশের দেদুল্যমান সম্পর্কের মধ্যে এমন সিদ্ধান্ত ভালো চোখে নেয়নি বাংলাদেশ।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার দাবি, ভারত সরকার ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের আগেই গত মার্চ মাসে বাংলাদেশ তিনটি বন্দর বন্ধ ও স্থল বন্দর দিয়ে সুতা আমদানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। যদিও সুতা আমদানি সংক্রান্ত নির্দেশনা কেবলই গত সপ্তাহে জারি করে অন্তর্বর্তী সরকার।
এছাড়া গত জানুয়ারিতে বেনাপোল কাস্টমস হাউজে বাংলাদেশ সতর্কতা বাড়ানোর যে ঘোষণা দিয়েছিল সেটিও দুই দেশের বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত করা হয়েছিল বলে দাবি করেছে তারা।
সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়েছে, ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত করতে বাংলাদেশ পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি বাণিজ্য শুরু করেছে। এতে ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তান ট্রেডিং কর্পোরেশনে মাধ্যমে ৫০ হাজার টন চাউল আমদানির বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।